সম্প্রতি উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে নাটকীয়ভাবে পদত্যাগ করেছেন জগদীপ ধনখড়। পদত্যাগের ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির দ্বারা এ কথা জানিয়েছে কমিশন। সংবিধানের ৬৮(২) ধারা অনুযায়ী, উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে মৃত্যুর কারণে অথবা পদচ্যুত কিংবা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে দ্রুত ওই শূন্য পদে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করার কথা রয়েছে। সেই অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন উপরাষ্ট্রপতি পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কাজ পুরোটাই পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন পরিচালিত হবে ১৯৫২ সালের ‘প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আইন’ এবং ১৯৭৪ সালের সংশ্লিষ্ট বিধিমালা অনুযায়ী।
নির্বাচন কমিশন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে, নির্বাচকমণ্ডলীর তালিকা প্রস্তুত, রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ এবং পূর্ববর্তী নির্বাচনের পটভূমি উপকরণ প্রস্তুত। ইতিমধ্যেই ইলেক্টোরাল কলেজ গঠন শুরু হয়ে গিয়েছে। ইলেক্টোরাল কলেজ সাধারণত লোকসভা ও রাজ্যসভার মনোনীত ও নির্বাচিত সাংসদের নিয়ে গঠিত হবে। পাশাপাশি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহ-রিটার্নিং কর্মকর্তার নাম চূড়ান্ত হবে। আর পূর্ববর্তী নির্বাচন প্রক্রিয়ার নথি উদ্ধারের প্রক্রিয়াও চলছে।
এই নির্বাচনের প্রক্রিয়াতে মনোনয়ন দাখিলের সময়সীমা থেকে শুরু করে মনোনয়ন পত্র যাচাই ও মনোনয়ন প্রত্যাহার সবই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। নির্বাচনের সময় ভোটদান ও ভোট গণনার প্রক্রিয়াও অনুসরণ হয়। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কেবল সাংসদরা ভোট দিতে পারবেন।
লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে মোট ৭৯২ সংসদ সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে ৩৯২ টি ভোট পেতে হবে উপরাষ্ট্রপতির প্রার্থীকে। তবেই তিনি জয়ী হতে পারবেন। বিভিন্ন মহলের মতে ধনখড়ের পদত্যাগের পর এই উপনির্বাচনে সরকারের পক্ষে প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। তবে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকেও প্রার্থী দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই উপনির্বাচন চলতি বাদল অধিবেশনে হতে পারে।
উল্লেখ্য, মেয়াদ পূরণের আগে পদত্যাগ কোনো নতুন বিষয় নয়। এর আগেও রাষ্ট্রপতি পদ থেকে ভি ভি গিরি ও ভেঙ্কটরমন মেয়াদ শেষের আগেই পদত্যাগ করেছিলেন। বর্তমানে যিনি উপরাষ্ট্রপতি পদে বসবেন তিনি শুধুমাত্র ধনখড়ের মেয়াদের বাকি সময়টুকু নয় পুরো পাঁচ বছরের জন্য এই পদে থাকবেন। অর্থাৎ ২০২৭-এ ধনখড়ের পর উপনির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে এখন সেটা হওয়ায় উপরাষ্ট্রপতির পদে বসা নতুন প্রার্থীর মেয়াদ হবে ২০২৫ থেকে ২০৩০সাল পর্যন্ত।