অষ্টম বেতন কমিশনের আনুষ্ঠানিক ভাবে গঠন হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গত মঙ্গলবার এর টার্ম অফ রেফারেন্সকে অনুমোদন দিয়েছে। প্যানেলকে তাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য ১৮ মাসের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে, সেই নির্দেশ অনুযায়ী সংশোধিত বেতন ২০২৭ সালের আগে কার্যকর হবে না। যদিও সরকার বকেয়া বড় পরিমাণের বেতন পরিশোধের ইঙ্গিত দিয়েছে। পূর্ববর্তী বেতন কমিশনের উদাহরণ উল্লেখ করে সরকার জানিয়েছে, অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশ ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকেই মিলবে তবে তা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ২০২৭।
কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার বিহারের নির্বাচনের আগে অষ্টম বেতন কমিশনের ঘোষণা করেছে কিন্তু কেন্দ্রের সরকারি কর্মচারীরা এবং পেনশনভোগীরা ২০২৬ সালে এই ঘোষিত বর্ধিত বেতন বা পেনশন পাবেন না। কমিটি গঠনের ঘোষণা হয়েছে ঠিকই কিন্তু এই কমিটি সঠিক ভাবে কাজ করে সুপারিশ পাঠাতে এবং তা সরকারের অনুমোদন পেতে ২০২৬ সাল পেরিয়ে যাবে। তাই তাঁরা আশা করছেন, ২০২৭ সালের আগে পুনর্বিবেচিত বেতন তাঁরা পাবেন না।
উল্লেখ্য, অষ্টম বেতন কমিশনের সভাপতিত্ব করবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা দেশাই, যিনি উত্তরাখণ্ড এবং গুজরাতে সাধারণ নাগরিক কোড কমিটির প্রধানও ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে বেতন কমিশন বেতন সংশোধনের জন্য ‘ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর’ এবং অন্যান্য পদ্ধতির প্রস্তাব দেওয়ার আগে সম্পর্কিত বিভিন্নজনের সঙ্গে আলোচনা করবে। উল্লেখ্য, পূর্ববর্তী বেতন কমিশন ২.৫৭-এর ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরের প্রস্তাব করেছিল, যার অর্থ ছিল মূল বেতন এবং পেনশনে ১৫৭ শতাংশ (অথবা ২.৫৭ দ্বারা গুণিত) বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে কার্যকর বৃদ্ধি কম ছিল, কারণ মহার্ঘ ভাতা এবং মহার্ঘ সহায়তা শূন্যে পরিণত করা হয়েছিল। অষ্টম বেতন কমিশনের ক্ষেত্রে সংশোধিত বেতন এবং পেনশন কার্যকর হওয়ার পর ডিএ এবং ডিআর শূন্যে রিসেট করার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে প্রধান ভাতা মূল বেতনের ৫৮ শতাংশ।
সপ্তম বেতন কমিশনের ক্ষেত্রে সংশোধিত বেতন এবং পেনশন জুলাই ২০১৬ থেকে কার্যকর করা হয়েছিল, কিন্তু কর্মচারীদের এবং পেনশনভোগীদের জানুয়ারি ২০১৬ থেকে শুরু হওয়া সময়ের জন্য মাত্র ৬ মাসের বকেয়া পরিশোধ করেছিল সরকার। কর্মচারী ইউনিয়নের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা আছে, সাধারণত বেতন কমিশনের সুপারিশ প্রতি দশ বছরে একবার কার্যকর করা হবে। এই প্রথা অনুযায়ী, অষ্টম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের সুপারিশ সাধারণত ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কার্যকর হওয়ার আশা করছেন কর্মচারীরা।’ নিঃসন্দেহে এই পদ্ধতিতে সরকার নিশ্চিত করে জানায় না যে, বকেয়া কবে পরিশোধ করা হবে। কিন্তু সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে, সংশোধিত বেতনকে পূর্ববর্তী সময় থেকে কার্যকর করা হবে এবং সাধারণত কর্মচারীরাও তাই আশা করছেন।