উত্তরপ্রদেশ জুড়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার মাক্সিজোন পঞ্জি প্রতারণা কাণ্ডে বড়সড় পদক্ষেপ করল আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এই রাজ্যের অন্তত ২০টি জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালান ইডি’র আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, তল্লাশিতে বিপুল পরিমাণ নথি, লেনদেনের হিসেব, তথ্যে ভরা ইলেকট্রনিক উপকরণ এবং কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে।
অভিযোগ, মাক্সিজোন নামের এই সংস্থা অতিরিক্ত লাভের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শত শত সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বহু কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘দ্রুত লাভ’, ‘দ্বিগুণ অর্থ ফেরত’— এই ধরনের উচ্চ প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছিল বলে অভিযোগ। তদন্তে উঠে এসেছে, টাকা সংগ্রহের পরে সংস্থার পক্ষ থেকে তা বিনিয়োগকারীদের ফেরত দেওয়া হয়নি। উল্টে নানা অ্যাকাউন্টে ঘুরিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আধিকারিকদের দাবি, এই দুর্নীতি কাণ্ডে অর্থপাচারের একাধিক স্তর রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এই লেনদেনগুলির মাধ্যমে সংগৃহীত টাকা ভুয়ো সংস্থা, ব্যক্তিগত বিকল্প অ্যাকাউন্ট এবং নগদে তুলে লোপাট করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মাক্সিজোন সংস্থার কয়েকজন প্রতিনিধি, ডিরেক্টর এবং আর্থিক উপদেষ্টাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের নামে থাকা বেশ কয়েকটি সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। শীঘ্রই সেগুলি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। পাশাপাশি, এই চক্রটির সঙ্গে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে অন্য কোনও সংস্থা যুক্ত ছিল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মাক্সিজোন প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্ত বহু মানুষের অভিযোগে ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা দায়ের হয়েছিল। ইডি অভিযানের পর সাধারণ মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে যে, এ বার প্রকৃত দোষীরা ধরা পড়বে এবং চুরি যাওয়া অর্থের অন্তত কিছুটা উদ্ধার করা সম্ভব হবে। ফলে ইডি’র এই অভিযানের খবরে উত্তরপ্রদেশ জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, গোটা চক্রটি ভেঙে দেওয়ার জন্য পরবর্তী কয়েকদিন আরও জোরদার তল্লাশি অভিযান ও জিজ্ঞাসাবাদ চলবে।