ইন্ডিগোর বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক করতে নিয়ম শিথিল করল ডিজিসিএ

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বুধবার থেকে বিপর্যস্ত ইন্ডিগোর বিমান পরিষেবা। টানা তিন দিনে বাতিল করা হয়েছে একাধিক বিমান পরিষেবা। শুক্রবারও বাতিল করা হল ওই বেসরকারি সংস্থার বিমান। এদিন প্রায় ৬০০-রও বেশি বিমান বাতিল করা হয়েছে। রাত ১২টা পর্যন্ত দিল্লি বিমানবন্দর থেকে উড়বে না ইন্ডিগোর কোনও বিমান। দিল্লি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, চেন্নাই বিমানবন্দর থেকেও সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ইন্ডিগোর কোনও বিমান ছাড়বে না।

বৃহস্পতিবার সারা দিনে মোট ৫৫০টি বিমান বাতিল করেছিল ইন্ডিগো। বৃহস্পতিবার রাতে যাত্রীদের কাছে ক্ষমাও চায় ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ। বুধবার এক দিনে ইন্ডিগোর ২০০-রও বেশি উড়ান বাতিল হয়েছিল। যার জেরে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুর মতো দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। শুধু তা-ই নয়,  গোটা নভেম্বর জুড়েই মোট ১২৩২টি উড়ান ইন্ডিগো বাতিল করেছে বলে জানা গিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার নতুন ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশনস-এর একটি ক্লজ প্রত্যাহার করল ডিজিসিএ।  নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, সাপ্তাহিক বিশ্রামের দিনের বদলে অন্য কোনও ছুটি নেওয়া যাবে না। বিমান বিপর্যয় সামলাতে অবশেষে সেই নিয়ম তুলে নিল কেন্দ্র। ছুটি নিয়ে পাইলট এবং ক্রুদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। যা গত কয়েক দিনে চরম আকার নেয়।


এদিন একাধিক বিমান সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন। তার পরেই বিবৃতি জারি করে, তাৎক্ষণিক ভাবে ছুটি নিয়ে নিয়ম প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বৈঠকে ডিরেক্ট জেনারেল অফ সিভিল বলেন, ‘অপারেশনাল চাপ কমাতে বিভিন্ন বিমান সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এই বিধি পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে হয়েছে।’

ক্রু সঙ্কট এবং অনিয়মিত সময়সূচির জন্য এই নিয়ম বদলের আবেদন জানিয়েছিল একাধিক এয়ারলাইন্স সংস্থা। বর্তমান পরিস্থিতিতে এয়ারলাইনগুলির আবেদন মেনে নেওয়া ছাড়া ডিজিসিএ-র কাছে কোনও উপায় ছিল না। শুক্রবার থেকেই এই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ফলে এখন ছুটিকে সাপ্তাহিক বিশ্রাম হিসেবে ধরলে রোস্টার বানাতে এয়ারলাইনগুলির সুবিধা হবে। উল্লেখ্য, যাত্রী পরিষেবার প্রায় ৬০ শতাংশই ইন্ডিগোর দখলে। ফলে নিয়ম বদলানোর ফলে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রী আটকে থাকার অভিযোগ ওঠে। খাবার এবং জলও মেলেনি বলে অনেকেই দাবি করেন। ক্রু রোস্টার সমস্যা, প্রযুক্তিগত জটিলতা ও নতুন ডিউটি-নর্মসের জন্যই এই বিপর্যয় বলে দাবি করেছিল ইন্ডিগো। কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে নিশানা করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। লোকসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘বিমান পরিষেবা হোক কিংবা অন্য কোনও ক্ষেত্র, ভারতীয় অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে ‘ন্যায্য প্রতিযোগিতা’ ফিরিয়ে আনতে হবে। একচেটিয়া আধিপত্য অর্থনীতিকে দুর্বল করে।’

ইন্ডিগো বিমান বিপর্যয় নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবি তোলেন বিরোধীরাও। এ দিন রুল ১৮০ অনুযায়ী রাজ্যসভায় নোটিস দিয়েছেন শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নায়ডু কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন।