সংসদে বাঙালি হেনস্থার আলোচনার দাবি খারিজ

ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর বেআইনি হেনস্তা, ডিটেনশন ও নিগ্রহের ঘটনার প্রতিবাদে সংসদে জরুরি আলোচনার দাবি জানিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ২৬৭ ধারায় রাজ্যসভায় এই ইস্যুতে নোটিস দেয় দলটি। তৃণমূলের বক্তব্য, বিশেষ করে বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যে শুধু বাংলা ভাষায় কথা বলার ‘অপরাধে’ নিরপরাধ বাঙালিদের আটক, হেনস্তা এমনকি গ্রেপ্তার পর্যন্ত করা হচ্ছে। অথচ কেন্দ্র সরকার সেই আলোচনার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।

তৃণমূলের এই দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করে কংগ্রেসও। সংসদে হাত শিবিরের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে আলোচনা চাওয়া হয়। কিন্তু কোনও কক্ষেই তৃণমূলের নোটিস গৃহীত হয়নি। এর প্রতিবাদে ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংসদে একটা নোটিস খারিজ করা যায় ঠিকই, কিন্তু মানুষের আন্দোলনকে দমন করা যায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে আজ বাংলা বলাটা অপরাধে পরিণত হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে আজ গোটা বাংলা ও বাঙালিকেই কোণঠাসা করার অপচেষ্টা চলছে। আমরা সেই প্রসঙ্গেই সংসদে আলোচনা চাইছিলাম।” ঋতব্রতের মতে, বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য অতীতে মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, আজও বাঙালির কণ্ঠরোধ করা যাবে না।


উল্লেখ্য, ২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ইস্যুতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, কেন্দ্র সরকারের তরফে নির্বাচনের আগে বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা বিরোধী নীতি কার্যকর করা হয়েছে। এমনকি সার্কুলার পাঠিয়ে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র সন্দেহের জেরে কাউকে এক মাস ধরে আটকে রাখা যাবে। মমতার অভিযোগ অনুযায়ী, ‘এক হাজারের বেশি বাঙালিকে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ওড়িশার জেলে ভরেছে। বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত আক্রমণ চলছে।’

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, ‘কে কী ভাষায় কথা বলবে, কে কী খাবে, তা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু বাংলার মাটি তা মানে না। এখানে মানুষের অধিকার সংবিধান অনুযায়ী রক্ষিত থাকবে।’ এই আবহেই এবার সংসদের ভিতর থেকেও সেই প্রতিবাদকে তুলে ধরতে চাইছে তৃণমূল। যদিও এই দফায় কেন্দ্র তাদের দাবি মানেনি, কিন্তু তৃণমূল জানিয়েছে, ভবিষ্যতে ফের এই ইস্যু সংসদে উত্থাপন করবে তারা।