রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসে কেন্দ্রের স্বীকৃতির দাবি উঠল রাজ্যসভায়

পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে ১ বৈশাখকে চিহ্নিত করার রাজ্যের সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় সরকারের মর্যাদার দাবিতে সোমবার রাজ্যসভার শূন্যপ্রহরে দাবি উত্থাপন করেন তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। পাঁচ হাজার বছরের প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই ফের বাংলা ও বাঙালি নিয়ে সুর চড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল। রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসের স্বীকৃতির দাবি তুলে তৃণমূলের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করলেন ঋতব্রত।
সংসদের উচ্চকক্ষে এদিন ঋতব্রত বলেন, ১ বৈশাখের সঙ্গে বাঙালির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে। এশিয়ার প্রথম কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ সবই কলকাতায় তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রামমোহন রায়ের প্রসঙ্গও টানেন তিনি। বর্তমানে সময়ে দেশজুড়ে যেভাবে বাংলাভাষা ও বাঙালিদের অপমান করা হচ্ছে সেই অভিযোগও সামনে আনেন তৃণমূল সাংসদ। তবে তিনি সরাসরি বিজেপির নাম উল্লেখ করেননি।
কিন্তু তাঁর বক্তব্যের সময় হট্টগোল শুরু করেন কেন্দ্রের শাসকদলের সাংসদেরা। তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রতর অভিযোগ, রামমোহন রায়কে অপমান করা হয়েছে।  এই অভিযোগ তোলার পর বিজেপি সাংসদদের হট্টগোল আরও বেড়ে যায়। যদিও হট্টগোলের মাঝেই বক্তৃতা চালিয়ে যান তৃণমূল সাংসদ। তিনি জানান, ইউরোপের বাইরে একমাত্র নবজাগরণ অবিভক্ত বাংলাতেই হয়েছিল। রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে একটি দিন চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটিকে রাজ্য সঙ্গীত হিসেবেও স্বীকৃতি দিয়েছে রাজ্য। বর্তমানে যে কোনও সরকারি অনুষ্ঠানের শেষে এই গান গাইতে হয়।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বাংলা–বাঙালি আবেগকে হাতিয়ার করে ভোটের ময়দানে নেমেছিল তৃণমূল। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটেও সেই ধারা অব্যাহত থেকেছে। তৃণমূলের বক্তব্য হল, বিজেপি বাঙালির আবেগ বোঝে না। বর্তমানে বাংলাদেশি সন্দেহে দেশজুড়ে বাঙালি হেনস্থার ঘটনায় রাজনীতির ময়দানে বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে তৃণমূল। তাই আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলা–বাঙালি নিয়ে আবেগের হাতিয়ারে শান দিচ্ছে বাংলার শাসকদল। সেই পথে হেঁটেই এবার রাজ্যসভায় শীতকালীন অধিবেশনে শূন্যপ্রহরে ১ বৈশাখের প্রসঙ্গ তুললেন ঋতব্রত।