বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ফের ডেকে পাঠাল দিল্লি, দু’দেশের মধ্যে চাপানউতর অব্যাহত

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় বর্মাকে ডেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রক। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাকে তলব করল ভারত সরকার। এক সপ্তাহে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতকে তলব করল দিল্লি।

কী কারণে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতকে ফের তলব করা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। তবে গত কয়েক দিনে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তার মধ্যেই গত সপ্তাহে হামিদুল্লাকে তলব করে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে ভারত সরকার।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ছয়বার তলব করা হল ভারতের রাষ্ট্রদূতকে। এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর প্রণয় বর্মাকে তলব করা হয়েছিল। তারপর ১৭ ডিসেম্বর দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে পাল্টা তলব করেছিল ভারতের বিদেশমন্ত্রক।


বাংলাদেশে দীপুচন্দ্র দাসের হত্যার আঁচ পড়েছে ভারতে। মঙ্গলবার দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন এবং কলকাতার উপদূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, এভিবিপি, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ-সহ সঙ্ঘ পরিবারের একাধিক সংগঠন। বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। সেই আবহে প্রণয়কে তলব করে উদ্বেগপ্রকাশ করে মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির। তার পর থেকেই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। নিরাপত্তাজনিত কারণে বাংলাদেশে বেশ কিছু ভিসাকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। এরপর গত সোমবার একরাতে ভারতে বাংলাদেশের তিনটি ভিসাকেন্দ্র বন্ধ করে দেয় ঢাকা। মঙ্গলবার ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় বর্মাকে তলব করেন বাংলাদেশের বিদেশসচিব আসাদ আলম সিয়াম।

সূত্রের খবর, প্রণয় বর্মাকে ডেকে ভারতের বিভিন্ন স্থানে থাকা বাংলাদেশ ভিসাকেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকার তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লির বাংলাদেশি দূতাবাস, বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের বাসভবনের বাইরে উত্তেজনা এবং ২২ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসাকেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বিগ্ন ঢাকা।

বাংলাদেশের এই উত্তাল পরিস্থিতি নিয়ে রবিবার দুপুরেই বিবৃতি দিয়েছে ভারত সরকার। দীপুর হত্যাকারীদের বিচারের দাবি তুলেছে দিল্লি। একই সঙ্গে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ নিয়েও উদ্বেগপ্রকাশ করেছে ভারত সরকার। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা বিবৃতি প্রকাশ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রক।

ময়মনসিংহের ঘটনা নিয়ে ভারতের বিবৃতিতে আপত্তি জানিয়েছে তারা। মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার ওই বিবৃতিতে দাবি করেছে, ময়মনসিংহের ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ভারতের কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বলে দেখাচ্ছেন বলে দাবি তাদের। এর মধ্যেই বুধবার ফের বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত হামিদুল্লাকে ডেকে পাঠাল দিল্লি।