দিল্লি বিস্ফোরণের পর অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে গাড়ি বিক্রি— সবকিছুতেই কড়া নজরদারি

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

দিল্লির লাল কেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনতে উদ্যোগী হয়েছেন দিল্লির উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনা। ঘটনার দশ দিন পর তিনি দিল্লি পুলিশ কমিশনার এবং মুখ্য সচিবকে একাধিক কঠোর নির্দেশ দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের কেনাবেচায় কড়া নজরদারি, সোশ্যাল মিডিয়ায় উগ্রপন্থা নিয়ন্ত্রণ, ডাক্তারদের ডিজিটাল ডেটাবেস তৈরির পাশাপাশি যানবাহন ক্রয়–বিক্রয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ। বিস্ফোরণের তদন্ত এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে এই নির্দেশগুলি রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

উপরাজ্যপালের নির্দেশ অনুযায়ী, নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট কিনলে বা বিক্রি করলে ক্রেতা এবং বিক্রেতা— দু’জনেরই ডিজিটাল রেকর্ড রাখতে হবে। এতে ছবি, পরিচয়পত্র সহ সব তথ্য সংগ্রহ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কারণ, অতীতে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এ ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করে হামলার ছক কষেছে, এমন নজিরও রয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে নজরদারিও বাড়ানো হচ্ছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, অনলাইন কনটেন্টের সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন, বিশেষ করে যেসব পোস্টে উগ্রপন্থা ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে প্রযুক্তিগতভাবে কনটেন্ট ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। পাশাপাশি কমিউনিটি আউটরিচ বাড়ানোর লক্ষ্য রাখা হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষও সন্দেহজনক বিষয় জানাতে এগিয়ে আসেন।


এছাড়া, প্রথমবারের মতো ডাক্তারদের একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল ডেটাবেস তৈরি করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, প্যারামেডিক্যাল স্টাফ— সকলের ডিগ্রি, পরিচয় ও সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য রাখা হবে এই রেকর্ডে। বিদেশি ডিগ্রিধারী ডাক্তারদের ক্ষেত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

যানবাহনের ক্রয়–বিক্রয়ের ক্ষেত্রেও কঠোরতা বাড়ছে। অনেক সময় দেখা যায়, গাড়ির নথিতে যে মালিকের নাম থাকে, বাস্তবে গাড়িটি ব্যবহার করেন অন্য কেউ। বিশেষত অটোরিকশার ক্ষেত্রে পারমিটধারী এবং প্রকৃত চালক আলাদা থাকেন, যা আইনশৃঙ্খলার দিক থেকে যথেষ্ট সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই অনলাইন বিক্রেতা এবং আর্থিক সংস্থাগুলিকে সঙ্গে নিয়ে এই পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

লাল কেল্লার বিস্ফোরণের পরে দিল্লিবাসীর মনে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে উপরাজ্যপালের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিরাপত্তা জোরদার করার দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট বার্তা, রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।