পুরনো গাড়ির বেপরোয়া বাজারে ক্ষোভ দিল্লি হাই কোর্টের

ফাইল চিত্র

দিল্লিতে পুরানো গাড়ি কেনাবেচার অনিয়ন্ত্রিত বাজার নিয়ে আপত্তি জানাল দিল্লি হাই কোর্ট। একই সঙ্গে সরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থারর ঘাটতি নিয়েও তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করল আদালত। আদালতের কড়া মন্তব্য, ‘আরও কয়েকটা বিস্ফোরণ হয়ে যাওয়ার পরে কি আপনাদের টনক নড়বে!’

এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সম্প্রতি দিল্লির লাল কেল্লার কাছে যে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছিল, সেখানে বিক্রি হওয়া একটি পুরানো গাড়িই ব্যবহার করা হয়েছিল।

ফলে পুরানো গাড়ির কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণ করতে দিল্লিতে কয়েক বছর আগে যে নিয়ম চালু হয়েছিল, সেই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে আদালতে। সেই অভিযোগ ঘিরেই দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। বুধবার মামলাটির শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি দেবেন্দ্রকুমার উপাধ্যায় এবং বিচারপতি তুষার রাও গেদেলার বেঞ্চে।


শুনানির সময় আদালত সরাসরি সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘একটি গাড়ি চার বার হাত বদল হচ্ছে। কিন্তু কাগজে মালিক বদলাচ্ছে না। এটা কী ভাবে সম্ভব!’ আদালতের মতে, এর জেরে সমস্যায় পড়ছেন গাড়ির প্রকৃত মালিক।

দিল্লি সরকারের উদ্দেশে ডিভিশন বেঞ্চ কড়া মন্তব্য করে। আদালত জানায়, ‘এ সব কী ভাবে হচ্ছে! আপনারা কী করে এই ধরনের লেনদেনে অনুমতি দিচ্ছেন! আরও দুই-তিনটে বোমা বিস্ফোরণ হলে তবেই কি ব্যবস্থা নেবেন!’

এই পরিস্থিতিতে আদালত দিল্লি সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, গোটা বিষয়টি নিয়ে হলফনামা জমা দিতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে জানুয়ারি মাসে। তার আগেই সরকারকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বর মাসে লাল কেল্লার কাছে একটি ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণ ঘটে। ওই ঘটনায় অন্তত পনেরো জনের মৃত্যু হয়। জখম হন আরও অনেকে। বিস্ফোরণে ব্যবহার করা হয়েছিল হুন্ডাই আই২০ গাড়ি।

তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই গাড়িটি একাধিকবার হাতবদল হয়েছিল। শেষবার মালিকানা বদল হয় বিস্ফোরণের মাত্র তেরো দিন আগে। এগারো বছরে মোট পাঁচ বার বিক্রি হয় গাড়িটি। শেষ পর্যন্ত গাড়িটি পৌঁছয় জঙ্গি উমর উন্ নবির হাতে। তিনি পেশায় চিকিৎসক বলে জানা গিয়েছে।

এই ঘটনার পরই পুরানো গাড়ির বাজার নিয়ে নজরদারি না থাকার বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। দিল্লি হাই কোর্টের মতে, এই অনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাই বড় বিপদের পথ খুলে দিচ্ছে।