লালকেল্লা সংলগ্ন ব্যস্ত এলাকায় গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রথমে আত্মঘাতী হামলার আশঙ্কা করা হলেও তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে উঠে এসেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ঘটনাটি আত্মঘাতী হামলা নয়। বরং পুলিশের নজরদারি ও তল্লাশি বাড়ায় আতঙ্কে সন্দেহভাজন নিজেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলে।
প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি গাড়ি থামার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে। সাধারণ মানুষ নিহত ও বহুজন জখম হন। প্রাথমিক দৃশ্য প্রথমে পরিকল্পিত হামলার ইঙ্গিত দিলেও আইইডি–র ধরণ, বিস্ফোরণের শক্তি এবং গাড়ির ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করে তদন্তকারীরা দেখেছেন, ডিভাইসটি পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল না। ফলে বিস্ফোরণটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণের মতো বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারেনি।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে দিল্লি–হরিয়ানা সীমানায় পুলিশের তল্লাশি কঠোর করা হয়। সন্দেহভাজন প্রশাসনের এই নজরদারি টের পেয়ে ভয় পেয়ে যায়। সেই অবস্থাতেই গাড়ির ভেতরে থাকা বিস্ফোরক সক্রিয় হয়ে যায়। তাঁরা বলেন, ‘ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল। কিন্তু হঠাৎ আতঙ্কে সন্দেহভাজন বিস্ফোরক সক্রিয় করে ফেলে।’
তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, আত্মঘাতী হামলার ক্ষেত্রে যে ধরনের গভীর গর্ত, ধাতব শার্পনেল ছড়িয়ে পড়া বা গাড়ির বড় অংশ দূরে ছিটকে যাওয়ার ঘটনা দেখা যায়, এ ক্ষেত্রে সেই চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বরং এটি ছিল তুলনামূলকভাবে কম শক্তির ‘অসম্পূর্ণ বিস্ফোরণ’।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বিস্ফোরণের আগে গাড়িটি একাধিকবার পার্কিং এলাকায় ঢুকেছে ও বেরিয়েছে। নিকটবর্তী টোলপ্লাজার ফুটেজও সংগ্রহ করছে পুলিশ। হামলাকারী একা ছিল, নাকি সংগঠিত চক্রের অংশ— তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনার পর দিল্লি জুড়ে নিরাপত্তা আরও কড়া করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও মেট্রো স্টেশনগুলিতে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে যৌথ তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘অসম্পূর্ণ বিস্ফোরণ’ হয়েও এই ক্ষতি ভয়াবহ। বিস্ফোরক পুরোপুরি সক্রিয় থাকলে প্রাণহানি আরও অনেক বেশি হত। ঘটনার তদন্ত চলছে খুব দ্রুতগতিতে। হামলাকারীর পরিচয় ও চক্রের মূলসূত্র তুলে আনাই এখন পুলিশের প্রধান লক্ষ্য।