নির্বাচনী বন্ড ইস্যুতে এসবিআই-এর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের 

দিল্লি, ৭ মার্চ – নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে ৬ মার্চের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ ছিল সুপ্রিম কোর্টের। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য জমা দেয়নি স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। বরং শীর্ষ আদালতের কাছে অতিরিক্ত সময়ের আবেদন জানিয়েছে ব্যাঙ্ক। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ অমান্য করাতেই এবার এসবিআই-র বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করল বেসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস বা এডিআর। বৃহস্পতিবারই এই সংস্থা স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে। 

সুপ্রিম কোর্টে এসবিআইয়ের বিরুদ্ধে যে পিটিশন এডিআর জমা করেছে , তাতে বলা হয়েছে, “এসবিআই ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় অমান্য করেছে। এটা শুধুমাত্র নাগরিকদের তথ্য জানার অধিকারকেই অমান্য করা হচ্ছে না, একইসঙ্গে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকেও ইচ্ছাকৃতভাবে অগ্রাহ্য করা হয়েছে।” অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস বা এডিআর রাজনীতি সংক্রান্ত নানা কাজ করে, রাজনৈতিক দলগুলির তথ্য প্রকাশ করে। এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে বিষয়টি উল্লেখ করেন এডিআর-এর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে এ বিষয়ে ই-মেল মারফত আবেদন করার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এরপরই পরবর্তী শুনানের দিন জানানো হবে।
যদিও ৬ মার্চের আগেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল এসবিআই। তথ্য প্রকাশের জন্য তারা আরও সময় চায়। এসবিআই আগামী ৩০ জনের মধ্যে বিস্তারিত তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা করতে চায় বলে আদালতে জানিয়েছে।  বৃহস্পতিবার আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সামনে এডিআর-এর আবেদনের কথা উল্লেখ করেন।  তিনি জানান, এসবিআই সময়সীমা বাড়ানোর জন্য একটি আবেদন করেছে যা সোমবার তালিকাভুক্ত হতে পারে।  এডিআর-এর তরফে করা আদালত অবমাননার আবেদনও একই সঙ্গে তালিকাভুক্ত হোক বলে বলে আবেদন করেন তিনি। বেঞ্চ আবেদনটি খতিয়ে দেখতে রাজি হয়েছে।  বেঞ্চের আশ্বাস , এই আবেদন শুনানির জন্য ১১ মার্চ তালিকাভুক্ত করা হবে।  
 

প্রসঙ্গত, নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত মামলায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায়ে নির্বাচনী বন্ড-কে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করে এবং নির্বাচনী বন্ড বাতিল করে দেয়। একইসঙ্গে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অবধি নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জমা দিতে বলা হয়। ৬ মার্চের মধ্যে  এই তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছিল।

স্টেট ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ১৫ এপ্রিলের মধ্যে মোট ২২ হাজার ২১৭টি ইলেকটোরাল বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। যেমন, যে শাখাগুলি থেকে বন্ড বিক্রি করা হয়েছে সেখানে যেমন তথ্য রয়েছে, তেমনি মুম্বাইয়ের এসবিআই-এর প্রধান শাখায় রাখা হয়েছে। ফলে বন্ড কেনার যাবতীয় তথ্য পেশ করার জন্য সময়ের প্রয়োজন।


এডিআর-এর অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করছে এসবিআই। কারণ তারা চায় না লোকসভা নির্বাচনের আগে এইসব তথ্য প্রকাশ্যে আসুক।  এইসব তথ্য এসবিআই সহজেই দিতে পারে বলে দাবি ওই সংস্থার। এখন অপেক্ষা সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে কি নির্দেশ দেয়  তার।