কর্ণাটকের আলন্দ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার ঘটনায় বিস্ফোরক অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। তাদের দাবি, তদন্তকারী বিশেষ দপ্তর (এসআইটি)-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়াবহ তথ্য। ভোটারদের নাম মুছে ফেলতে প্রতি ক্ষেত্রে ৮০ টাকা করে ঘুষ নেওয়া হয়েছিল।
কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের ছত্রছায়ায় কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মী ও স্থানীয় নেতারা পরিকল্পিতভাবে ভোটার তালিকা থেকে হাজার হাজার নাম বাদ দেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট কিছু বুথে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের লক্ষ্য করে তাঁদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, যাতে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করা যায়।
এসআইটি সূত্রের খবর, স্থানীয় প্রশাসনের কয়েকজন কর্মী ও ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্বীকার করেছেন, ‘একটি নাম বাদ দিতে গড়ে ৮০ টাকা করে দেওয়া হত।’ কংগ্রেসের দাবি, এটি প্রমাণ করে যে, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজকে পুরোপুরি দুর্নীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনায় গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিই নষ্ট করা হয়েছে। যারা এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভোট চুরির জন্য সরকারি ব্যবস্থাকে ব্যবহার করা হচ্ছে, এটি দেশের জন্য লজ্জার।’
অন্যদিকে, বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, কংগ্রেস জনমত হারাচ্ছে বলেই মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে। বিজেপি মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘এসআইটি তদন্তে এখনো কিছু প্রমাণিত হয়নি। কংগ্রেস শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায়।’
প্রসঙ্গত, রাজ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই ভোটার তালিকা নিয়ে একাধিক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কয়েকটি কেন্দ্রে হঠাৎই বহু ভোটারের নাম উধাও হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। এরপরই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআইটি-কে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আলন্দ কাণ্ড প্রমাণ করে যে ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ায় কঠোর নজরদারির অভাব এখনও গুরুতর সমস্যা। কংগ্রেস এই ঘটনার মাধ্যমে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘গণতন্ত্র ধ্বংসের’ অভিযোগ তুলে জনমত সংগঠনের চেষ্টা করছে। তদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে আরও বহু অস্বচ্ছ লেনদেনের হদিশ মিলবে বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা।