ব্রিটেন সফরে গিয়ে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বার্তা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউরোপ এবং চিনের দিকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়ে কড়া আঙুল তুললেও, নয়াদিল্লির প্রতি তাঁর সুর ছিল যথেষ্টই নরম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, ট্রাম্পের এই অবস্থান শুধুই কূটনৈতিক বার্তা নয়, বরং একটি স্পষ্ট কৌশল, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে রাশিয়াকে ঘিরে আন্তর্জাতিক সমীকরণে প্রভাব বিস্তার।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ভারতের খুব কাছের মানুষ। আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রীরও ঘনিষ্ঠ। সম্প্রতি তাঁকে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জানিয়েছি। আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো।’ তাঁর এই মন্তব্য ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন করে আলোর সঞ্চার করেছে।
তবে ইউরোপীয় দেশ এবং চিনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতে ছাড়েননি ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, ‘ইউরোপের দেশগুলি এখনও রাশিয়া থেকে প্রচুর তেল কিনছে। অথচ আমিই রাশিয়ার উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলাম। চিনও এখন আমেরিকাকে বড় অঙ্কের শুল্ক দিচ্ছে। কিন্তু আমি চাই, তেলের দাম কম থাকুক। তবেই রাশিয়া আলোচনার টেবিলে আসবে।’
ট্রাম্পের এই অবস্থানের পর রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, নতুন করে রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করতে চলেছেন তিনি। তবে সেই চাপ ভারত বা চিনের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর মাধ্যমে হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে, ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া কড়া সুরে আক্রমণ শানিয়েছে আমেরিকার বিরুদ্ধে। মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, ‘চিন আর ভারত, দু’টিই প্রাচীন সভ্যতা। ওদের বলা হয়েছিল, আমার যেটা পছন্দ নয়, সেটা বন্ধ না করলে শুল্ক চাপাব। কিন্তু এই কৌশল ব্যর্থ। আমেরিকাও সেটা বুঝতে পারছে।’
উল্লেখ্য, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় আগেই ভারতের বেশ কিছু পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। মোট শুল্কের হার দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। তবুও ভারত মস্কো থেকে তেল আমদানি বন্ধ করেনি।
লাভরভ আরও বলেন, ‘নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও রাশিয়ার বিশেষ কোনও ক্ষতি হয়নি। এর আগেও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন বহু নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছি।’