গগৈকে ক্লিনচিট

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ (File Photo: IANS)

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে আনা যৌন হেনস্থার অভিযােগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের অভ্যন্তরীণ প্যানেল।

বিচারপতি এস এ বােবদে, বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি হিন্দু মালহােত্রার প্যানেল আজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এই তদন্ত রিপাের্ট জনগণের সামনে আনার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তাই এই রিপোের্ট তারা প্রকাশ্যে আনতে পারবে না।’

সেইসঙ্গে জানান হল, প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে আনা যৌন অভিযােগের মধ্যে উপযুক্ত কোনও সারবত্তা তাঁরা খুজে পাননি। তাই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওই মহিলা কর্মীর আনা যৌন হেনস্থাকে পুরােপুরি অযৌক্তিক।


মঙ্গলবারই অভিযােগকারীণী জানিয়েছিলেন, এই প্যানেলের পরিবেশ এতটাই ভয়াবহ যে তিনি ভয় পাচ্ছেন। তাছাড়া বিচারপতি এন ভি রামানাকে নিয়েও আপত্তি ছিল অভিযােগকারীণীর। তাঁর অভিযােগ ছিল, এন ভি রামানা প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নিকট আত্মীয়। সেই কারণে নিরপেক্ষ বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ওই মহিলা।

এরপরই প্যানেল থেকে সরে দাঁড়ান বিচারপতি রামানা। ওর জায়গায় নিয়ে আসা হয় বিচারপতি ইদু মালহােত্রাকে। রমানা নিজে থেকে এই প্যানেল থেকে সরে দাড়ানাের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন নিরপেক্ষ বিচার হওয়ার জন্য। কিন্তু তারপরও এই তদন্ত থেকে সরে দাঁড়ান অভিযােগকারীণী।

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযােগ বিচারের জন্য তিন সদস্যের একটি অভ্যন্তরীণ প্যানেল গঠিত হয় সুপ্রিম কোর্টে। তবে সুবিচার পাওয়ার আশা না দেখে ওই প্যানেলের সামনে হাজিরা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেন অভিযােগকারীণী। বিবৃতিতে ওই মহিলা জানান, শুনানির সময় তাঁর আইনজৰিাতে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া তাঁর বক্তবের অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং করা হচ্ছে না। তদন্ত প্রক্রিয়া কোন পথে চলবে তাও তিনি জানেন না। সেই সঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে এতদিন পর যৌন হেনস্থার অভিযােগ দায়ের করলেন তিনি। সুবিচার পাওয়ার কোনও আশা না দেখে তিনি তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে সরে দাড়াবেন বলে জানান।

এই তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে অভিযােগকারীণী সরে দাঁড়ালেও তাঁকে ছাড়াই শুনানি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিচারপতি এস কে বােবদে, বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি ইদু মালহােত্রার তিন সদস্যের প্যানেল। তবে তা কতখানি যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন তােলেন বিচারপতি নরিম্যান ও বিচারপতি ওয়াই এস চন্দ্রচূড়।

বিচারপতি নরিম্যান প্যানেলের সামনে প্রস্তাব দেন অভিযােগকারীণীর আইনজীবীকে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া হােক। তা না হলে শুনানির সময় একজন নিরপেক্ষ পরামর্শদাতা নিয়ােগ করা হােক।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে ১৯ এপ্রিল যৌন হেনস্থার অভিযােগ আনেন ওই আদালতেরই এক জুনিয়র আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারপতিকে হলফনামা দিয়ে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযােগ করেন তিনি। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলে অভিযােগ নস্যাৎ করেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগে সেই সঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশের বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য একটি শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠেছে।