ছটপুজোয় দেশে ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা: সিএআইটি

ছটপুজোয় গোটা দেশে ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছে কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (সিএআইটি)। ছট উৎসবের পর সিএআইটি-র গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১০ কোটিরও বেশি মানুষ ছট উৎসবে যোগদান করেছেন।

শুধুমাত্র বিহারেই ১৫ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। রাজধানী দিল্লিতে ছটপুজোয় ব্যবসা হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকার আর ঝাড়খণ্ডে ৫ হাজার কোটির। ‘সনাতন অর্থনীতি’ নামে একটি গবেষণা করছে কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স। সেই গবেষণাতেই এসব তথ্য উঠে এসেছে। এই গবেষণায় দেশের বিভিন্ন উৎসব থেকে শুরু করে বিয়ের মরশুমের সার্বিক ব্যবসা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

সিএআইটি-র জেনারেল সেক্রেটারি এবং সাংসদ প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেন, ‘দেশে ছট উদযাপনের প্রধান কেন্দ্র বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পূর্ব উত্তরপ্রদেশ, বিশেষ করে পূর্বাঞ্চল এলাকা।’ এই সমস্ত রাজ্যে ছট পুজো চলাকালীন নদী এবং পুকুরের ধারে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান। পূর্বাঞ্চলের লোকদের একটা বড় অংশ দিল্লি এবং ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন বা এনসিআর-এ বসবাস করেন। সেজন্য এইসব এলাকাতেও ছটের সময় ব্যবসা জমজমাট ছিল।


ছট উৎসবের কথা মাথায় রেখে দিল্লি সরকার ১৫০০টি ঘাট তৈরি করার পাশাপাশি উন্নত পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করেছিল। নিকাশি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ঢেলে সাজিয়েছে দিল্লি সরকার। খান্ডেলওয়াল বলেন, ‘ছটের সময় পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং রাজস্থান সহ অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও ভালোই ব্যবসা হয়েছে। বিভিন্ন মেট্রো শহর এবং ওড়িশা, কর্ণাটক এবং তেলেঙ্গানার মতো রাজ্যগুলির বাজারেও ভিড় ভালোই ছিল। কর্মসূত্রে এই সব রাজ্যে থাকা মানুষেরাও ছট উৎসব পালন করেছেন।’

সিএআইটি-র মতে, ছট উৎসবের সময় মূলত কলা, আখ, নারকেল, চাল ছাড়াও ঠেকুয়া এবং লাড্ডুর মতো মিষ্টি, ঝুড়ি, প্রদীপ, ফুল এবং মাটির পাত্রের মতো প্রয়োজনীয় পুজোর উপকরণ প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হয়েছে। এর পাশাপাশি ঘাট সংস্কার, আলোকসজ্জা, নিকাশি ব্যবস্থা সংক্রান্ত কাজেরও চাহিদা ছিল।

প্রবীণ খান্ডেলওয়াল আরও বলেন, ‘স্বদেশী পণ্যের প্রচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আহ্বান এবং সাম্প্রতিক সময়ে জিএসটির হার কমানোর মতো বিষয়গুলি এই উৎসব-বাণিজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বাজারগুলি দক্ষ কারিগর, বাঁশের ঝুড়ি প্রস্তুতকারক এবং গুড় উৎপাদনকারীদের প্রচারের জন্য ‘স্বদেশী ছট’ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল। এর ফলে স্থানীয়ভাবে তৈরি পণ্যের বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। সাংসদ প্রবীণ খান্ডেলওয়ালের কথায়, ‘দীপাবলিতেও দেশজুড়ে প্রচুর টাকার ব্যবসা হয়েছিল। একই চিত্র চোখে পড়েছে ছটেও।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুই উৎসব দেশের অর্থনীতিকে আরও মজবুত করবে।