শ্বাসরোধ করে সন্তানকে খুন, আত্মহত্যার চেষ্টা ‘সিইও’ মায়ের 

বেঙ্গালুরু, ১০ জানুয়ারি – গোয়ায় চার বছরের সন্তানকে হত্যার ঘটনায় উঠে আসছে আরও অনেক নতুন তথ্য। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে, স্যুটকেসে ভরে নিয়ে যাওয়ার ৩৬ ঘন্টা আগে শিশুটিকে খুন করা হয়।  মৃত শিশুটির পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেখে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত মা সূচনা শেঠকে।  শিশুটির বাবা বেঙ্কট কর্মসূত্রে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় থাকেন। সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন। ময়নাতদন্তের পর শিশুর দেহ তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়।

বেঙ্গালুরুর স্টার্টআপের সিইও সূচনা শেঠের বিরুদ্ধে নিজের চার বছরের সন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ্যে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই ঘটনায় হিরিউর তালুক হাসপাতালের এক আধিকারিক সাংবাদিকদের বলেন, শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। চিকিৎসার ভাষায় যাকে বলা হয় স্মোদারিং। কাপড় বা বালিশ দিয়ে নাক-মুখ চেপে ধরে খুন করা হয়। তবে শিশুটির শরীরে রক্তক্ষরণ বা ধ্বস্তাধ্বস্তির কোন চিহ্ন নেই। 
   

পুলিশের অনুমান, সন্তানকে খুন করার পরিকল্পনা অনেক দিন আগে থেকেই ছিল সূচনা শেঠের।  গোয়া পুলিশ জানিয়েছে, ওই অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেশ কয়েকটি কাশির ওষুধের খালি শিশিপাওয়া যায়। পুলিশের অনুমান, সন্তানকে প্রচুর পরিমাণে ওষুধ খাওয়াতেন সূচনা। গোয়া পুলিশের আধিকারিক এক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, সূচনা যে ঘরে সন্তানকে খুন করেছিলেন, সেখানেও পাওয়া যায় কাফ সিরাপের দু’টি খালি শিশি। একটি বড় এবং অন্যটি তুলনায় ছোট। ওই অ্যাপার্টমেন্টের এক কর্মীকে দিয়ে ছোট কাফ সিরাপের শিশিটি আনিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।পুলিশের অনুমান , খুনের আগে প্রচুর ওষুধ খাইয়ে শিশুটিকে ঘুম পাড়িয়ে ফেলেছিলেন সূচনা। তার পর বালিশ বা কাপড় দিয়ে চেপে ধরেন তার মুখ।

পুলিশ সূত্রে খবর, সূচনা কয়েক মাস আগে স্বামী পিআর বেঙ্কট রমনের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ দায়ের করেন। গত অগস্টে স্বামীর বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ করেন সূচনা। আদালতে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলাও চলছে। যদিও আদালতে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সূচনার স্বামী। আগামী ২৯ জানুয়ারি তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ছিল।


পুলিশ এ-ও জানায় , উত্তর গোয়ার ওই সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টে চার বছরের সন্তানকে হত্যা করার পরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন সূচনা। হাতের শিরা কেটে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। সেই রক্তই ঘরের মেঝেতে এবং তোয়ালেতে পাওয়া যায় বলে পুলিশের অনুমান।  আপাতত তাঁকে ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ।