নাগপুর থেকে শাসন করা যাবে না, অসমে তােপ রাহুলের

রাহুল গান্ধি (File Photo: IANS)

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি আজ অভিযােগ করেছেন যে, সারা দেশে নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলা সত্ত্বেও বিজেপি ‘মানুষের কথা’ শুনছে না। নতুন আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তৃতীয় সপ্তাহে পড়েছে। কিন্তু সরকারের দাবি, এই আইন তারা কার্যকর করবেই। অসম সহ বেশির ভাগ রাজ্যেই প্রতিবাদ মােকাবিলায় পুলিশ বলপ্রয়ােগ করেছে। অসমে ব্যাপক হিংসা থামাতে পুলিশ গুলি চালানােয় ৫ জন মারা গেছে।

আজ অসমে কংগ্রেসের ‘সংবিধান বাঁচাও-ভারত বাঁচাও’ প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে এক জনসবায় রাহুল বলেন, ‘বিজেপি যেখানেই গেছে ঘৃণা ছড়িয়েছে। অসমে যুবসমাজ প্রতিবাদে নেমেছে, অন্যান্য রাজ্যেও প্রতিবাদ চলছে। কিন্তু প্রতিবাদকারীদের আপনারা গুলি করে মারছে কেন? বিজেপি মানুষের কথা শুনতে চায় না। আপনারা উত্তর-পূর্বের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে দমন করার চেষ্টা করছেন। আপনারা মানুষের মনােভাব বােঝেন না। আমরা বিজেপি ও আরএসএস’কে অসমের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করতে দেব না। নাগপুর থেকে অসমকে শাসন করা যাবে না’। অসমের জনগণই অসমকে শাসন করবে’।

রাহুল আরও বলেন, ‘বিজেপি’র কারণেই অসম আবার হিংসার পথকে আশ্রয় করেছে। অসম চুক্তিই হচ্ছে অসমের শাস্তির ভিত্তি। অসম চুক্তির ভাবাদর্শকে কখনও ভাঙা উচিত নয়। সকলে মিলে এটা রচনা করেছে। ঘৃণা ও হিংসা দিয়ে অসম কখনও অগ্রগতির পথে যেতে পারবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপি নেতাদের বলতে হবে, আপনারা রাজ্যের সংস্কৃতি, ভাষা, পরিচয় ও ইতিহাসকে আক্রমণ করতে আসবেন না’।


অসমের প্রতিবাদকে বিজেপি সরকার যেভাবে মােকাবিলা করেছে তার সমালােচনা করে রাহুল বলেন, ‘বিজেপি’র পথ ভুল। মানুষ যদি শান্তিপূর্ণভাবে জানিয়ে দিতে চায় যে তারা কী চায়, তাহলে হিংসা বা গুলিচালনার পথ নেওয়ার তাে কোনও প্রয়ােজন নেই। এদিন রাহুল গত ১২ ডিসেম্বর অসমে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত ১৭ বছর বয়সী স্যাম স্ট্যাফোর্ডের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সমবেদনা জানান।

নতুন নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কে রাহুল বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ার মূল বিষয় হল প্রত্যেক দরিদ্র মানুষকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তারা ভারতীয়, নাকি ভারতীয় নয়। তাঁর (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি) ১৫ জন বন্ধুকে কিন্তু কোনও নথিপত্র দেখাতে হবে না। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে গিয়ে যে টাকা উঠবে ওই ১৫ জনের পকেটে ঢুকবে। এর প্রভাব বিমুদ্রাকরণের দ্বিগুণ। এনপিআর ও এনআরসি’কে তিনি দ্বিতীয় নােটবন্দি হিসেবে অভিহিত করেন।

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে রাহুল বলেন, বিমুদ্রাকরণ ও জিএসটি চালু করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। সমগ্র বিশ্ব ভারতের অর্থনৈতিক শক্তিকে স্বীকার করেছিল। কিন্তু মােদি ভারতমাতার সেই শক্তিকে ধ্বংস করেছে। মােদি এসব সম্পর্কে কিছু বলেন না। তাঁর কাজ হল ভারতের জনগণকে বিভাজন করা ও ঘৃণা ছড়ানাে।

অসমের ভারপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা হরিশ রাওয়াত বলেছেন, রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে বলি দিয়ে ১৯৮৫ সালে রাহুল গান্ধির পিতা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধি অসম চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। তাই রাহুল গান্ধি অসমের জনগনের আবেগটা বােঝেন, কারণ অসম তাঁর হৃদয়ের খুব কাছাকাছি।