কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড়সড় সুখবর। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন মিলল অষ্টম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের শর্তাবলী বা ‘টার্মস অফ রেফারেন্স’। অর্থাৎ, ৮ম বেতন কমিশনের কাজের পরিধি ও নির্দেশিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঠিক করে দিল কেন্দ্র।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান, একজন আংশিক সময়ের সদস্য এবং একজন সদস্য-সচিব নিয়ে কমিশনটি গঠিত হবে। গঠনের তারিখ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে কমিশনকে তার প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে কমিশন অন্তর্বর্তী রিপোর্টও পেশ করতে পারবে।
কেন্দ্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী, কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হতে পারে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে। ফলে, কেন্দ্রীয় কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের বেতন, ভাতা ও সেবা শর্তে বড়সড় পরিবর্তন আসতে পারে।
সরকার জানিয়েছে, কমিশন তার সুপারিশ তৈরির সময় দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রাজকোষীয় ভারসাম্য, উন্নয়নমূলক খরচের প্রয়োজন, এবং অবদানবিহীন পেনশন প্রকল্পের ব্যয়ভার—এই সব বিষয় বিবেচনা করবে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের অর্থনীতিতে এর প্রভাব এবং সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্রের বেতন-পরিসর সম্পর্কেও নজর রাখতে হবে কমিশনকে।
বর্তমানে প্রায় ৫০ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী এবং ৬৭ লক্ষেরও বেশি পেনশনভোগী রয়েছেন। তাঁদের বেতন কাঠামোই মূলত এই কমিশনের আওতাভুক্ত। রাজ্য সরকারগুলিও প্রায়শই কেন্দ্রীয় কমিশনের প্রস্তাব অনুসরণ করে থাকে। ফলে এর প্রভাব গোটা দেশের সরকারি কর্মচারির বেতন ব্যবস্থায় পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্র প্রায় প্রতি দশ বছর অন্তর বেতন কমিশন গঠন করে থাকে, যাতে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পুনর্বিবেচনা করা যায়। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হয়েছিল ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে। এবারও সেই ধারা বজায় রেখে ২০২৬ সালের শুরুতেই অষ্টম বেতন কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র সরকার।
অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন কমিশনের সুপারিশে সরকারি কর্মীদের আয় বাড়লে তা খরচ ও বাজার চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের রাজকোষের ওপরও চাপ বাড়বে। এখন দেখার, ৮ম পে কমিশনের প্রস্তাবে কী পরিমাণ বেতন বৃদ্ধি ও ভাতা পুনর্বিন্যাসের সুপারিশ আসে।