দু’দিনের ভারত সফরে এলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। বুধবার ভোরে মুম্বই বিমানবন্দরে অবতরণ করে তাঁর বিমান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পাশাপাশি আরও কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। স্টার্মারকে স্বাগত জানান মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে এবং অজিত পাওয়ার। ২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পরে এটাই স্টার্মারের প্রথম ভারত সফর।
ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর পর থেকেই আমেরিকার সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপড়েন চলছে ভারতের। এর মধ্যেই ব্রিটেনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছে সাউথ ব্লক। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক মহল। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার।
ওই বৈঠকের পরে মুম্বইতেই মোদীর সঙ্গে একটি আলোচনাচক্রেও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে স্টার্মারের। সেখানে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞ এবং উদ্যোগপতিদের সঙ্গে আলাপচারিতায় যোগ দেওয়ার কথা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর। মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে খবর। বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন কিয়ের স্টার্মার। প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু, জ্বালানি থেকে শুরু করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হবে তাঁদের। পাশাপাশি বৈঠকে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর জুলাই মাসেই বিট্রেন সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে ব্রিট্রেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। ওই সফরেই দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আগামী বছর থেকেই চুক্তি কার্যকর হবে বলে জানা গিয়েছে। এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার পরে ব্রিটেনে তৈরি বা ব্রিটেন থেকে আমদানিকৃত চিকিৎসা সরঞ্জাম, বিমান সরঞ্জাম ভারতীয় নাগরিক এবং ভারতীয় সংস্থাগুলির জন্য আগের চেয়ে সস্তা হবে। ব্রিটেনে তৈরি সফ্ট ড্রিঙ্কস, চকোলেট, প্রসাধনী সামগ্রী, বিস্কুট এবং স্যামন মাছ ভারতীয়দের জন্য অনেক সহজলভ্য হবে। এই সমস্ত পণ্যে এত দিন গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক কার্যকর থাকত। মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির ফলে তা কমে দাঁড়াবে তিন শতাংশে। বৈদ্যুতিক গাড়ির শুল্ক ১১০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমে আসবে।
এই বাণিজ্যচুক্তিই ভারত সফরের মূল কারণ বলে বার বার জানিয়েছেন স্টার্মার। সম্প্রতি আমেরিকা এইচ-১বি ভিসা নীতি কঠোর করেছে। এরপরই অনেকে ভেবেছিলেন ভারতের জন্য ব্রিটেনের দরজা প্রশস্ত হবে। ভিসানীতিতেও বদল আনতে পারে ব্রিটেন। তবে এই বিষয়ে যে ব্রিটেন এখনই কিছু ভাবছে না তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব জুড়ে শীর্ষ প্রতিভাদের সন্ধান করে ব্রিটেন। কিন্তু ট্রাম্পের অধীনে এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থা পরিবর্তনের পর ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের জন্য এখনই কোনও নতুন পথ খোলার পরিকল্পনা নেই আমাদের।’