আকাশের রঙ বদল করে কিছুক্ষণ অদৃশ্য রইল চাঁদ

জোছনা করেছে আড়ি…। বেগম আখতারের গাওয়া গানের কলিটা আক্ষরিক অর্থেই সত্যিই হল বুধসন্ধ্যায়। খাতায় কলমে আজ পূর্ণিমা। আরও ভালো করে বললে মাসের প্রথমদিন অর্থাৎ পয়লা জানুয়ারির পর মাসের শেষ দিনটিতে ছিল দ্বিতীয় পূর্ণিমা তিথি। কিন্তু পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহনের জন্য এদিন কিছুক্ষণের জন্য চাঁদ অদৃশ্যই রইল আকাশে। সন্ধে ৬টা ২২ মিনিট থেকে ৭টা ৩৮ মিনিট পর্যন্ত চাঁদ যে কোন গলি দিয়ে চলে গেল কে জানে।

ফিরে অবশ্য এসেছিল ৮ টা ৪১ মিনিটের পর। ক্যালেন্ডারে একই মাসে দ্বিতীয়বারে ওঠা এই চাঁদকে বলা হয় ব্লু মুন। এই ব্লু মুন দেখা যায় ছত্রিশ বছর অন্তর। এই ঘটনার ভিত্তিতেই ইংরেজি প্রবাদ ‘ওয়ান্স ইন আ ব্লু মুন’ এসেছে। বাংলায় যার অর্থ ডুমুরের ফুল। তবে এদিনের এই মহাজাগতিক ঘটনা শুধু ব্লু মুনেই আটকে নেই।

বুধবার চোখের সামনেই এই ব্লু মুন রং বদল করেছে। পূর্ণগ্রাস চন্দ্র গ্রহনের ছায়ায় সন্ধের চাঁদ রক্তের মত লাল হয়ে যায়। যাকে বিজ্ঞানীরা বলেন ‘ব্লাড মুন’। সেই সঙ্গে বুধবার ছিল এমন একটা দিন, যেদিন চাঁদ পৃথিবীর ভীষণই কাছে চলে এসেছে, যার ফলে চাঁদকে স্বাভাবিক আকারের তুলনায় ৭ শতাংশ বড় দেখিয়েছে। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘সুপার মুন’। বুধবার এই তিনটি ঘটনাই একসাথে ঘটায় বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ব্লু ব্লাড সুপার মুন। বিরল এই ঘটনা প্রায় দেড়শ বছর অন্তর ঘটে থাকে। এই ঘটনা দেখতে এই শহরের বহু মানুষ ভিড় করেছিল বাড়ির ছাদ থেকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল -এ। ভারত ছাড়াও এই ঘটনা দেখা গেছে রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও চিন থেকেও।


বুধবার চোখের সামনেই রং বদল করল চাঁদ। স্বাভাবিক রহস্যময়ী নীল রং থেকে রক্তিমাভা ধারণ করে একসময় আঁধারে হারিয়ে গেল। সেই মূহুর্তে চাঁদ রাঘবের গাওয়া গানের মত এক অভিমানিনী যেন। ‘চাঁদ কেন আসেনা আমার ঘরে। সে অভিমানিনী আজও তো বলেনি আসবে কিনা সে ফিরে…’। তবে এদিন অবশ্য চাঁদ আবার ফিরে এসেছিল রাত ৯ টার আগেই, পূর্ণ চাঁদের মায়া নিয়ে।