সম্প্রতি বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে বিতর্কের মুখে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘আসন্ন বিহার নির্বাচনে ভোট চুরির উদ্দেশ্যে নতুন একটি চক্রান্ত সামনে এসেছে।’
শুক্রবার বারামুন্ডা ময়দানে ‘সংবিধান বাঁচাও সমাবেশ’ উপলক্ষে রাহুল গান্ধী দাবি করেন, অতীতে মহারাষ্ট্রে ভোট চুরির পর এবার বিহার নির্বাচনেও চুরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বিজেপি দেশের সংবিধানকে আক্রমণ করছে। গতকাল আমি বিহারে ছিলাম। মহারাষ্ট্রে ভোট চুরির মাধ্যমে ভারতের নির্বাচন কমিশন বিজেপির দ্বারা আগেই কলুষিত হয়েছে। এবার বিহারে ভোট চুরির মাধ্যমে সেই একই ধারা বজায় রাখতে চাইছে।’
আসন্ন বিহার নির্বাচনে ভোট চুরির চক্রান্তের প্রসঙ্গ তুলে কমিশনকে তীব্র আক্রমণ করে রাহুল গান্ধী বলেন, শীর্ষ ভোটগ্রহণ সংস্থা তার দায়িত্ব পালন করছে না। বরং তারা বিজেপির হয়ে দালালি করছে। পাশাপাশি মহারাষ্ট্রে ভোট চুরির কারসাজির উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে প্রায় এক কোটি নতুন ভোটার সংযোজন করেছিল। কেউ জানে না, কারা এই ভোটার এবং তাঁরা কোথা থেকে এসেছে। আমরা বার বার নির্বাচন কমিশনের কাছে সেই ভোটার তালিকা এবং ভিডিওগ্রাফি চেয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের আবেদনে কর্ণপাত করেনি।’
তিনি দাবি করেছেন, একই ঘটনা বার বার ঘটছে। এই লোকগুলো (বিজেপি ও নির্বাচন কমিশন) মহারাষ্ট্রে যে ভোট চুরি করেছিল, তা পুনরায় করতে চাইছে।’ তিনি আরও বলেন, এই ভোট চুরি কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়, তা নিয়ে গতকাল আমরা ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকদের নিয়ে একটি বৈঠকও করেছিলাম।
তিনি বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার ‘ওড়িশা মডেল’-এর সমালোচনা করে বলেন, ‘ অতীতের বিজেডি সরকার এটা কখনও করেনি। এখন বিজেপি সরকার ঠিক সেই কাজটি করছে। একদিকে দরিদ্র ও বঞ্চিত শ্রেণী যেমন রয়েছে, অন্যদিকে পাঁচ থেকে ছয়জন কোটিপতি এবং বিজেপি সরকার রয়েছে।’
তিনি পুরী রথযাত্রার চূড়ান্ত অব্যবস্থা নিয়ে ওড়িশা সরকারকে অভিযুক্ত করে বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে জগন্নাথের রথ টানার কাজে বিলম্ব করেছে যাতে শিল্পপতি গৌতম আদানীর পরিবার রথ টানতে পারে। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘এই হল ওড়িশা মডেলের সরকার। উন্নয়ন কেবলমাত্র দেশের দু’তিনটি শিল্পপতি পরিবারের জন্যই করা হয়। কিন্তু গরিব, অসহায় এবং প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষের সম্পদ ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’
সেই সঙ্গে তিনি মহিলাদের নিরাপত্তাহীনতার কথাও তুলে ধরেন। রাহুল বলেন, ‘ওড়িশার ইতিহাসে প্রতিদিন ১৫টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হওয়ার লজ্জাজনক রেকর্ড রয়েছে।’ তিনি দাবি করেন যে, ৪০,০০০ এরও বেশি নারী দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাঁদের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।’