বিহারে দ্বিতীয় দফায় ঐতিহাসিক ভোটদান, ৬৮.৫২ শতাংশের নতুন রেকর্ড

ছবি: এনএনআই

শেষ হল বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় এবং চূড়ান্ত দফার ভোটগ্রহণ। নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক হিসাবে এই পর্যায়ে ভোট পড়েছে ৬৮.৫২ শতাংশ, যা বিহারের বিগত নির্বাচনী ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এবার প্রথম দফায় ৬ নভেম্বর ভোট হয়েছিল ৬৪.৬৬ শতাংশ। দুই দফা মিলিয়ে এ বার ভোটদানে মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।

দ্বিতীয় দফায় মোট ১২২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এই পর্বে লড়াইয়ে ছিলেন ১,৩০২ জন প্রার্থী। সকাল থেকেই বহু ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন ও বিপুল জনসমাগম লক্ষ্য করা যায়। প্রশাসন জানিয়েছে, এই দফায় নিরাপত্তা ও নজরদারি ব্যবস্থা যথেষ্ট কঠোর করা হয়েছিল। ফলে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।

এদিন দিনভর ভোটগ্রহণ হয়েছে ভাগলপুর, কাটিহার, সুপৌল, মধুবনী, ঔরঙ্গাবাদ—সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জেলায়। অধিকাংশ কেন্দ্রেই সকাল থেকে মহিলাদের ব্যাপক উপস্থিতি নজর কাড়ে। প্রবীণ ভোটাররাও আগ্রহ নিয়ে অংশ নিয়েছেন।


ভোট দেওয়ার পর জন সুরাজ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত কিশোর বলেন, বিহারে মানুষ ‘পরিবর্তন–চেতনা’ নিয়েই ভোট দিচ্ছেন। তাঁর দাবি, ‘গত ৩০–৩৫ বছর ধরে ভয় থেকে ভোট দিয়েছে মানুষ— লালুর ভয়, নীতীশের ভয়, বিজেপির ভয়। জন সুরাজ সেই বাধা ভেঙেছে। যারা কোনও দলকে সমর্থন করতে চাইছে না, তাদের সামনে এখন সৎ বিকল্প রয়েছে।’

এই নির্বাচন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জন্য, যিনি গত তিন বছরে বারবার জোট পরিবর্তন করে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। ২০২২ সালে বিজেপির সঙ্গে জোট ছিন্ন করে আরজেডি–কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়ার পর তিনি ২০২৪ সালের শুরুতে আবার এনডিএ–তে ফিরে আসেন। তাঁর এই রাজনৈতিক যাত্রাপথ এই নির্বাচনের অন্যতম আলোচ্য বিষয়।

বিহারের বাইরে এ দিন দেশে আরও আটটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে। জম্মু–কাশ্মীরের বদগাম ও নাগরোটা থেকে শুরু করে ওডিশার নুয়াপাড়া পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যে ভোট হয়েছে সমান গুরুত্বের সঙ্গে।

এখন অপেক্ষা ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত। রাজ্যের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সমীকরণ গড়ে দেবে সেই দিনের ফলাফলই। এ দিন ভোট গণনার দিন পরিষ্কার হয়ে যাবে, এনডিএ কি সত্যিই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ফিরছে, নাকি বিহারের রাজনীতিতে শেষ মুহূর্তে কোনও বড় চমক অপেক্ষা করছে।