বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর প্রথম দফার ভোটগ্রহণ জোর কদমে চলছে। ভোট শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই পাটনায় হাজির হলেন রাজ্যের সবচেয়ে নজরকাড়া রাজনৈতিক পরিবার যাদবরা। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব, রাবড়ি দেবী, আরজেডি নেতারূপে মহাগঠবন্ধনের মুখ তেজস্বী যাদব, তাঁর স্ত্রী রাজশ্রী যাদব এবং দিদি মিসা ভারতী— সকলে একসঙ্গে বুথে পৌঁছে ভোট দেন।
ভোট দিয়ে বেরিয়েই তেজস্বী যাদব দাবি করেন, ‘১৪ নভেম্বর বদল আসবেই। বদল আনুন, নতুন সরকার গড়ুন।’ মহাগঠবন্ধনের তরুণ নেতা এ দিন আবারও মানুষের প্রতি ভোটের আবেদন জানান।
তেজস্বীর সুরেই কথা বলেন দিদি ও আরজেডি সাংসদ মিসা ভারতী। তিনি বলেন, ‘সন্তানদের ভবিষ্যৎ ভেবে সবাই ভোট দিন।’ রাবড়ি দেবীও নারীদের এবং তরুণ ভোটারদের অনুরোধ জানান সক্রিয়ভাবে ভোট দানে অংশগ্রহণ করতে। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি সব মহিলা ও তরুণ ভোটারকে বলছি, বাইরে বেরিয়ে ভোট দিন। জনতা বদল আনবেই।’
তবে এ দিনের পারিবারিক জমায়েতে ছিলেন না লালুর বড় ছেলে তেজ প্রতাপ যাদব। তিনি স্বতন্ত্র ভাবে লড়ছেন। তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই রাবড়ি দেবীর শান্ত জবাব, ‘দু’জন ছেলেকেই আমার শুভেচ্ছা। তেজ প্রতাপ আলাদা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছে। আমি তাঁদের মা। দু’জনের জন্যই শুভকামনা।’
এদিন সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া ভোট চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। তবে নিরাপত্তার কারণে কিছু এলাকায় এক ঘণ্টা আগে ভোটগ্রহণ শেষ হবে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রায় ৩.৭৫ কোটি ভোটার নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে ১০.৭২ লক্ষ ভোটার প্রথমবার এবং ১৮ থেকে ১৯ বছরের ৭.৭৮ লক্ষ তরুণ ভোটার রয়েছেন।
মোট ১৮টি জেলার ১২১টি বিধানসভা আসনে আজ ভোটগ্রহণ হচ্ছে। দুই দফার নির্বাচনের এটাই প্রথম পর্ব। পরের পর্যায়ের ভোট হবে ১১ নভেম্বর। যে প্রচারপর্বে বড় বড় সভা, তীব্র বাকযুদ্ধ এবং নানা প্রতিশ্রুতিতে উত্তপ্ত হয়েছিল বিহারের রাজনৈতিক মানচিত্র, তারই প্রথম পরীক্ষা আজ।
এদিকে ক্ষমতাসীন এনডিএ— যার অন্তর্ভুক্ত বিজেপি, জেডিইউ, এলজেপি, এইচএএম এবং আরএলএম আবারও ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া। ২০২০ সালে অল্প ব্যবধানে জয় পেয়েছিল তারা। অন্যদিকে, আরজেডি-কংগ্রেস-ভিআইপি-বাম দলের মহাগঠবন্ধন মনে করছে জনমেজাজ এ বার অনেকটাই বদলে গিয়েছে। গতবার ১১০-র বেশি আসন পাওয়ার পর এ বারই তারা জয়ের লক্ষ্য স্থির রয়েছে।
প্রথম দফায় লড়াইয়ে নেমেছেন মোট ১,৩১৪ জন প্রার্থী। কিন্তু কিছু আসনের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাই রাজ্যের রাজনৈতিক হাওয়া কোন দিকে বইছে, তার ইঙ্গিত দেবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।