অনুপ্রবেশের অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা সোনালি-সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পথে বাংলাদেশ

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশের অভিযোগে সেখানকার জেলে বন্দি বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুন-সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশের আদালত। এক সংবাদ সংস্থা সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। তবে এই পদক্ষেপ তাঁদের আবার ভারতে ফেরানোর পথ সুগম করতে পারে বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে সোনালি-সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছে বাংলাদেশের আদালত। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের উত্তরাঞ্চলের প্রধান সরকারি আইনজীবী এম. আবদুল ওয়াদুদ ওই সংবাদ সংস্থাকে জানান, ‘সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল হক আগামী ২৩ অক্টোবর সোনালী খাতুন ও আরও ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানির তারিখ স্থির করেছেন। তাঁদের সঙ্গে ২ শিশু রয়েছে। তাঁরা গত ৪ মাস ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন।’ ওয়াদুদ জানান, ‘যদি অভিযুক্তরা আদালতে নিজেদের দোষ স্বীকার করেন, তাহলে তা তাঁদের দেশে ফেরার পথ আরও প্রশস্ত করতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাঁরা দোষ স্বীকার করবেন, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন,  ‘আমি সম্প্রতি জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাঁরা জানিয়েছেন, সোনালী, যাঁর বয়স প্রায় পঁচিশ, গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে রয়েছেন।’ সোনালিদের আইনত অভিযুক্ত করার বিষয়টি যে একটি নিয়মমাফিক আইনি প্রক্রিয়া সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন বাংলাদেশের সরকারি আইনজীবী এম. আবদুল ওয়াদুদ। 

বীরভূমের বাসিন্দা হলেও সোনালি বিবি কর্মসূত্রে থাকতেন দিল্লিতে। গত জুন মাসে বাংলাদেশি সন্দেহে সোনালি-সহ মোট ৮ জনকে আটক করে দিল্লি পুলিশ। ২৭ জুন তাঁদের অসম সীমান্ত দিয়ে জোরজবরদস্তি বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।বাংলাদেশে প্রবেশের পর স্থানীয় পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকেই তাঁরা বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার জেলে বন্দি। এই নিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক স্তরে বহু চাপানউতর চললেও এখনও জামিন মেলেনি তাঁদের। এদিকে সোনালিদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। বেঁধে দেওয়া হয়েছে সময়সীমাও।


পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ সামিরুল ইসলাম বাংলাদেশের আদালতে সোনালিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘সোনালি খাতুন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সময়সীমা ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত রয়েছে। ফলে সময়সীমার আগে এবং বাংলাদেশে কোনও সমস্যা হওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে আনবেন সেই আশা রাখি।’ 

প্রসঙ্গত,  বাংলাদেশি সন্দেহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ সোনালি খাতুন-সহ ৬  জনকে আটক করে বাংলাদেশে জোর করে পাঠানোর পর থেকেই তাঁদের পশ্চিমবঙ্গে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয় পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদ। হাইকোর্টে মামলা করেন সোনালির পরিবারের সদস্যরাও। গত ২৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টও নির্দেশ দিয়েছে ৬ জনকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য। এরই মধ্যে শনিবার  বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রধান সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, আগামী ২৩ অক্টোবর সোনালিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের শুনানি রয়েছে।