অযােধ্যায় বিতর্কিত জমি সমস্যায় সমাধান সূত্র বের করতে ব্যর্থ হল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত ৩ সদস্যের মধ্যস্থতাকারী কমিটি। জমি বিতর্কের ফয়সালা শীর্ষ আদালতেই হতে চলেছে। ৬ আগস্ট থেকে মামলার ধারাবাহিক শুনানি হবে বলে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ।
শুক্রবার অযােধ্যা মামলায় মধ্যস্থতাকারী কমিটির রিপাের্ট নিয়ে আলােচনা শুরু হয় শীর্ষ আদালতে। ৬ মিনিট ধরে মধ্যস্থতাকারী কমিটির রিপাের্ট নিয়ে আলােচনা হয়। সেখানেই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানান, ‘মধ্যস্থতাতেও কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি। তাই কমিটির কাজ স্থগিত রাখা হল’।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৮ মার্চ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এফ এম কলিফুল্লা, আধ্যাত্মিক গুরু রবি শঙ্কর এবং প্রবীণ আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চকে নিয়ে ৩ সদস্যের বিশেষ মধ্যস্থতাকারী কমিটি গঠন করেন সুপ্রিম কোর্ট। দুই বিবদমান পক্ষের সঙ্গে আলাপ আলােচনার মাধ্যমে অযােধ্যার বিতর্কিত মামলার সমাধান সূত্র বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয় কমিটিকে।
২০১০ সালে অযোধ্যা মামলায় ইলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয়, অযােধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি রাম লালা, সুন্নি ওয়াকফ বাের্ড এবং নিমােহী আখড়ার মধ্যে ৩ ভাগে ভাগ করে দেওয়া হােক। কিন্তু এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে একাধিক আবেদন জমা পড়ে।
অযোধ্যা জমি বিতর্কিত মামলার শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠিত হয়। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস এ বােবদে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশােক ভূষণ এবং বিচারপতি আব্দুল নাজিরের সাংবিধানিক বেঞ্চ মধ্যস্থতাকারী কমিটির কাছে গত ১১ জুলাই জানতে চায় আলাপ আলােচনা পর্ব কতটা এগিয়েছে। কমিটি সমাধান সূত্র বের করতে ব্যর্থ হলে ২৫ জুলাই থেকে ধারাবাহিকভাবে শুনানি শুরু হবে বলে জানায় শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ।
শীর্ষ আদালতের কাছ থেকে আলাপ আলােচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতের কাছে মধ্যস্থতাকারী কমিটি আরও সময় চায়। শীর্ষ আদালত সেই সময় বাড়াতে সম্মতি দেয় ১৮ জুলাই। রিপাের্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় ১৫ আগস্টে। তবে মামলার আবেদনকারী গােপাল সিংহ বিশারদের ছেলে রাজেন্দ্র সিংহ মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া রদ করার আবেদন জানালে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয় মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে কিনা তা আদালত ঠিক করবে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে রেজিস্ট্রি দফতরে অযােধ্যা মামলার রিপাের্ট জমা দেয় মধ্যস্থতাকারী কমিটি। সমাধান সূত্র বের করতে ব্যর্থ বলে রিপাের্টে জানান হয়েছে।
১৬ শতাব্দীতে নির্মিত বাবরি মসজিদ যেখানে অবস্থিত, অযােধ্যার সেই জায়গায় হিন্দু মন্দির ছিল বলে দাবি করে আসছে কয়েকটি হিন্দু সংগঠন। মুঘল সম্রাট বাবরের নির্দেশে সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয় বলে দাবি করে কয়েকটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। ১৯৯২ সালে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলায় অযােধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়। যার জেরে গােটা দেশে ধর্মযুদ্ধ লেগে যায়। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় গােটা দেশে মারা যায় প্রায় ২ হাজার মানুষ।