দেশকে রক্ষা করার শপথ নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন সেনাবাহিনীতে। পাঁচ মাস আগে বিয়েও করেন ল্যান্সনায়েক প্রীতপাল সিং। চলতি মাসের শেষেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তিনি নয়, ফিরছে তাঁর কফিন। স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন প্রীতপালের সদ্যবিবাহিতা স্ত্রী মনপ্রীত কউর। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে দিশাহারা নববধূ। দিশাহারা গোটা পরিবার। কান্না ভেজা চোখে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান, এই মাসের শেষে বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা ছিল প্রীতপালের, ছিল একসঙ্গে দিওয়ালি উদ্যাপনের ভাবনা।
গত শুক্রবার সেনা এবং জঙ্গিদের মধ্যে গুলির লড়াই চলাকালীন শহিদ হন প্রীতপাল এবং হিমাচলের মান্ডীর যুবক সেপাই হরমিন্দর সিং। প্রীতপাল ২০১৫ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। শুক্রবারের লড়াইয়ের আগে শেষবার ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই চলছে। খুব শীঘ্রই জঙ্গিদের খতম করা হবে। তার পরই খবর প্রীতপালের মৃত্যুর খবর আসে। পাঞ্জাবের লুধিয়ানার মনুপুর গ্রামের ৩০ বছর বয়সী প্রীতপালের বাবা হরবংশ সিংহ মুখের ক্যানসারে ভুগছেন। প্রীতপালের ইচ্ছা ছিল বাবাকে সুস্থ করা। ভাইয়ের সেই ইচ্ছা আর পূরণ হলো না বলে জানান প্রীতপালের দাদা হরপ্রীত সিং।
হরপ্রীত সিং বলেন, ‘ঘরে ভাইয়ের সদ্যবিবাহিত স্ত্রী। গত ফেব্রুয়ারিতেই বিয়ে হয়েছিল। ওঁর স্ত্রীকে কী বলে সান্ত্বনা দেব ভেবে পাচ্ছি না। সংসারে অনেক অভাব-অনটন দেখেছি। বাবা দিনমজুরের কাজ করতেন। সেনায় চাকরি শুরু করার পর থেকে পরিবারের হাল ধরেছিল ভাই। পরিবারকে ভাল রাখতে গিয়েই ওর প্রাণ গেল। ওর ত্যাগ ছিল পরিবারের জন্য।’ রবিবার মনুপুর গ্রামে প্রীতপালের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তাঁর স্মৃতিচারণ ও শ্রদ্ধা জানাতে গ্রামের মানুষ, আত্মীয়-স্বজন ও সহকর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।