সেনাপ্রধানের বিতর্কিত মন্তব্যে সমালােচনার ঝড়

সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। (File Photo: IANS)

নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভে হিংসাত্মক ঘটনার সমালােচনা করেছেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত । তিনি বলেছেন, ‘অগ্নিসংযােগ ও হিংসায় যারা জনগণকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা নেতা নন’। একটা নিরপেক্ষ ও অরাজনৈতিক পদে থেকে তিনি এই কথা কি করে বলেন, তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।

বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বিদায়ী সেনাপ্রধান বলেন, ‘নেতৃত্ব দেওয়াই নেতাদের কাজ। তারা যখন এগােবেন সবাই তাদের অনুসরণ করবে। কিন্তু নেতা হলেন তারাই যারা জনগণকে সঠিক দিকে পরিচালিত করেন। তারা নেতা নন যারা জনগণকে বিপথে পরিচালিত করেন, যা আমরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্রদের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। আমরা দেখছি নেতারা আমাদের শহরগুলিতে অগ্নিসংযােগ ও হিংসায় কিভাবে জনতাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এটা নেতৃত্ব নয়’।

জেনারেল রাওয়াত ৩১ ডিসেম্বর অবসরগ্রহণ করছেন। তিনি এই প্রথম নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদ সম্পর্কে মুখ খুললেন। তবে তিনিই প্রথম নন, তারও আগে আরও একজন পদস্থ সেনা অফিসার রাজনীতি- মিশ্রিত মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি রাজ্যের আপত্তি সত্ত্বেও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়েছে। এটা অনুমান করা কঠিন নয় যে এরপর বামপন্থী উগ্রপন্থার বিরুদ্ধেও কঠোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে’।


কংগ্রেস সহ বিরােধী দলগুলি সেনাপ্রধানের এই বিতর্কিত মন্তব্যের সমালােচনা করেছে। কংগ্রেসের মুখপাত্র ব্রিজেশ কালাপ্পা এক টুইটবার্তায় বলেছেন, ‘সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত সিএএ-বিরােধী প্রতিবাদ সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তা সাংবিধানিক গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আজ যদি সেনাপ্রধানকে রাজনৈতিক বিষয়ে বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়। তাহলে কাল তাঁকে তা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দখলের সুযােগ করে দেবে’।

হায়দরাবাদের সাংসদ ও এআইএমআইএম দলের প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েসিস টুইট করে বলেছেন, ‘নেতারা তার পদের সীমাপরিসীমা জানেন। অসামরিক ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠত্ব উপলব্ধি করা প্রয়ােজন, প্রয়ােজন সেই প্রতিষ্ঠানের সততা রক্ষা করা, যার নেতৃত্বে তিনি আছেন’।

কোনও কোনও নেতা অবশ্য জেনারেল রাওয়াতের সমর্থনেও এগিয়ে এসেছেন। তাঁদের বক্তব্য, দেশের একজন নাগরিক হিসাবে বক্তব্য রাখার অধিকারের সীমার মধ্যেই তিনি রয়েছেন। বিজেপির এক শরিক দলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আধাওয়ালে বলেছেন, ‘তাঁর বক্তব্যের অর্থ হল প্রতিবাদ যে কেউ করতে পারে, কিন্তু তাতে যেন হিংসা বা সম্পত্তি ধ্বংসের ঘটনা না ঘটে। জনতার নেতার উচিত প্রতিবাদকারীদের সঠিক দিশা দেখানাে ও হিংসাত্মক না হয়ে ওঠার কথা বলা’।