হিন্দির হয়ে সওয়াল করে দক্ষিণের রোষের মুখে অমিত শাহ

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। (File Photo: IANS)

হিন্দি দিবসের দিন ‘এক দেশ, এক ভাষা নিয়ে সােশ্যাল মিডিয়ায় হিন্দির পক্ষে জোর সওয়াল করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । গােটা দেশে হিন্দিভাষা প্রচলনের আর্জি জানান। শাহ আজ টুইটারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, ভারত একাধিক ভাষার দেশ। সব ভাষারই নিজস্ব বৈশিষ্ট আছে। বিশ্বের কাছে ভারতের নিজস্ব পরিচিতির জন্য একটা নির্দিষ্ট ভাষা থাকা একান্তই প্রয়ােজন। গােটা দেশের ঐক্য ও সংহতি বেঁধে রাখতে পারে একমাত্র হিন্দি ভাষাই। হিন্দি ভাষাতেই বেশিরভাগ মানুষ কথা বলেন।

হিন্দি ভাষার পক্ষে জোর সওয়াল করে দক্ষিণ ভারতের রাজনৈতিক নেতাদের কঠোর সমালােচনার মুখে পড়লের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । মুখ খুলেছেন ডিএমকে সভাপতি এমকে স্ট্যালিন, কর্নাটকের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী ও সিদ্দারামাইয়া। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হিন্দি ভাষার পক্ষপাতিত্ব নিয়ে তর্কবিতর্ক চলে গােটা দিন ধরেই ক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে চলতি বছরে জুন মাসে জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়ায় হিন্দি ভাষাকে বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেছিল কেন্দ্র সরকার। গােটা দক্ষিণ ভারত জুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এদিনও সেই একই চিত্র দেখা গেল রাজ্যে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর টুইটের পরিবর্তে আক্রমণ শানিয়েছেন ডিএমকে সভাপতি এমকে স্ট্যালিন। শাহের ব্যাখ্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির ব্যাখ্যা চেয়েছেন ডিএমকে নেতা।

স্ট্যালিন জানিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উচিত অমিত শাহের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়া। যদি তা না হয়, ডিএমকে বৃহত্তর ভাষা অন্দোলনের পথে যাবে। এটা ইন্ডিয়া, না হিন্দিয়া? বৈচিত্রের মধ্যেই ঐক্য ভারতীয় সংস্কৃতির বৈশিষ্ট। বিজেপি শাসিত এই সরকার সেটাই নষ্ট করতে চাইছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই মন্তব্য প্রত্যাহার করুক। তামিলনাড়ুর মানুষের রক্তে হিন্দির অস্তিত্ব নেই। আমরা সব সময় হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরােধিতা করে এসেছি। রেল, পােস্ট অফিসে নিয়ােগ প্রক্রিয়ায় হিন্দির ব্যবহার নিয়ে সরব হয়েছি। আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরােধিতা করছি’।


অমিত শাহকে ধিক্কার জানিয়ে কর্নাটকের রাস্তায় নেমেছে একাধিক প্রতিবাদী সংগঠন। হিন্দি ভাষাকে নিয়ে আরএসএসকে আক্রমণ শানিয়েছে কর্নাটক কংগ্রেস।দলের অভিযােগ, ‘আরএসএস মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার জন্য এই ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে। শাহকে আক্রমণ করেছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। টুইটারে তিনি লিখেছেন, আমরা হিন্দি ভাষার বিরুদ্ধে নই। কিন্তু জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার নীতির বিরােধিতা করছি’।

রাজ্যে সদ্য ক্ষমতাচুত্য মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী টুইটে লিখেছেন, ‘আজ দেশ জুড়ে হিন্দি ভাষা দিবস পালন করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারি ভাষা হিসাবে কবে হিন্দির সঙ্গে কন্নড় ভাষা দিবসও পালন হবে?’ এমআইএম সাংসদ আসাউদ্দিন ওয়েইসি দেশের মানুষেব সাংবিধানিক অধিকার স্মরণ করিয়ে দিয়ে টুইটারে জানিয়েছেন, ‘সব ভারতবাসীর মাতৃভাষা নয় হিন্দি, আপনি কি দেশের বহু ভাষার বৈচিত্র নিয়ে প্রশংসা করবেন সংবিধানের। ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদে ভারতবাসীকে পৃথক ভাষা, লিপি ও সংস্কৃতির অধিকার দেয়। সব মিলিয়ে ভাষা রাজনীতির আঁচ পড়েছে জাতীয় রাজনীতিতে।