উদ্বেগজনক! ভারতের বাণিজ্যিক সুবিধা ছাঁটাই করল আমেরিকা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প (File Photo: IANS)

প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণের দিন নরেন্দ্র মােদিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ভারতকে দেওয়া বিশেষ সুযােগসুবিধা বাতিল করলেন ট্রাম্প।

এখন থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক বসানাে হবে বলে ঘােষণা করেছে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রক। শনিবার ট্রাম্প তাঁর সিদ্ধান্ত ঘােষণার পর মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রক এক বিবৃতি জারি করে একথা জানিয়ে দেয়। আগামী ৫ জুন থেকে এই নয়া নিয়ম কার্যকর হবে। মার্কিন সরকারের এই পদক্ষেপকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়েছে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রক।

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই একথা ঘােষণা করেন। একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে তিনি বলেন, ভারতীয় বাজারে মার্কিন পণ্যকে সুযােগসুবিধা দেওয়া হয়নি, তাই জেনারালাইজড সিস্টেম অফ প্রেফারেন্স (জিএসপি) প্রকল্প থেকে ভারতের নাম বাতিল করাই যুক্তিযুক্ত। আগামী ৫ জুন থেকে ভারতের নাম বাতিল হয়ে যাবে।


এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে যে জিএসপি কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি সুবিধাভােগী ছিল ভারত। আমরিকা ভারত থেকে শুষ্কবিহীন ৫.৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করছিল, যা থেকে ভারত এখন বঞ্চিত হবে। জিএসপি’র আওতায় উন্নয়নশীল বেশ কিছু দেশকে বিশেষ সুবিধা দেয় মার্কিন সরকার, যাতে কোনওরকম শুল্ক ছাড়াই আমেরিকার বাজারে ওইসব দেশের পণ্য ঢুকতে পারে। আর কম দামে সেগুলি কিনতে পারেন সে দেশের ক্রেতারা।

এতদিন ভারতও সেই সুবিধা পেত কিন্তু এ বছরের মার্চ মাসে প্রথমবার ভারতকে সেই প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়ার কথা ঘােষণা করেন ডােনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর যুক্তি ছিল জিএসপি প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পায় ভারত। অর্থাৎ ভারতের বাজারে মার্কিন পণ্যের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপানো হয়।

মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক চাপানাে হবে বলে শুরুতে জানিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। পরে তা আরও পিছিয়ে ২৩ মে করা হয়। বিষয়টি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলাপ-আলােচনা চলছিল। মােদি সরকারের দৌত্যের ফলে শেষমেশ আমেরিকা সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলতে পারে বলে মনে করেছিল বিশেষজ্ঞ মহল। কিন্তু গত সপ্তাহেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেশ-বিদেশের দফতরের এক আধিকারিক। তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘােষণা করেন ট্রাম্প।

মার্কিন সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রক শনিবার এক বিবৃতি জারি করে বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুরােধ মাথায় রেখে দু’পক্ষই যাতে সমান সুযােগসুবিধা পায়, তার সমাধানও বার করেছিল ভারত। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় মার্কিন সরকারের কাছে তা গৃহীত হয়নি। পারস্পরিক আলােচনার মাধ্যমে বিষয়টির ফয়সালা করার ওপর গুরুত্ব আরােপ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের নিয়মিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমের ফয়সালা হয়ে যাবে। এবং আমেরিকার সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক ও দুই দেশের জনগণের মধ্যে যােগাযােগ আরও সুদৃঢ় হবে।