রাজধানী দিল্লি থেকে সরাতে হবে সমস্ত পথকুকুর, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

রাজধানী দিল্লির লোকালয় থেকে সমস্ত পথকুকুরদের সরিয়ে নির্দিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন। দিল্লি সরকার, দিল্লি পুরসভা এবং নয়াদিল্লি পুরসভাকে অবিলম্বে এই কাজ শুরু করার কথা বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ‘দিল্লির কোনও লোকালয়ে আর পথকুকুর থাকা চলবে না। এই বিষয়ে কোনও রকম আপস করা যাবে না।’ পাশাপাশি, আদালতের কড়া নির্দেশ যদি কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন এই প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সম্প্রতি দিল্লিতে পথকুকুরের কামড়ে জলাতঙ্কে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপও করে আদালত। সোমবারের শুনানিতে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ‘এই পদক্ষেপ জনস্বার্থে। তাই কোনও আবেগ বা পক্ষপাতদুষ্টতা এই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে না।’ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে দ্রুত পথকুকুরদের সরানোর কাজ শুরু করতে হবে। এই উদ্দেশ্যে চাইলে একটি বিশেষ দলও গঠন করা যেতে পারে। আশ্রয়কেন্দ্রে রাখতে হবে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা, থাকতে হবে সিসিটিভি নজরদারি। পথকুকুরদের নির্বীজকরণ ও টিকাকরণের জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থাও করতে হবে প্রশাসনকে।

সব ধরনের পরিকাঠামো যেমন আশ্রয়স্থল, কর্মী, নজরদারি ইত্যাদি আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে তৈরি করে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে বেঞ্চ। এই মামলায় পশুপ্রেমী সংগঠনগুলির ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। আদালতের কটাক্ষ, ‘জলাতঙ্কে মৃত ব্যক্তিদের কি পশুপ্রেমীরা ফিরিয়ে আনতে পারবেন?’ আদালত জানিয়েছে, এখন থেকে এ বিষয়ে আর কোনও পশুপ্রেমী সংগঠনের আবেদন শোনা হবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য অবশ্য পরবর্তী শুনানিতে শোনা হবে।


এই বিষয়ে আদালতবন্ধু (অ্যামিকাস কিউরি) গৌরব আগরওয়ালকে উদ্দেশ করে আদালতের নির্দেশ, ‘সমস্ত লোকালয় থেকে পথকুকুরদের সরিয়ে শহরের বাইরে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা দ্রুত কার্যকর করতে হবে।’ সার্বিকভাবে, দিল্লির জননিরাপত্তা এবং জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই এই কঠোর পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের। এই নির্দেশ দ্রুত কার্যকর না হলে দিল্লির প্রশাসনের উপর চাপ আরও বাড়বে, এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।