শীতকালীন অধিবেশন শুরুর ঠিক আগে রবিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হল সর্বদল বৈঠক। অধিবেশন ছোট হলেও, এই বৈঠক থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেল রাজনৈতিক সংঘাতের ইঙ্গিত—বিরোধী দলগুলি জানিয়ে দিয়েছে। নানা ইস্যুতে তারা সরকারকে চাপে ফেলতে প্রস্তুত বিরোধীরা। অন্যদিকে সরকার জানিয়েছে, কোন কোন আইন ও বিল তাদের এই অধিবেশনে অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে।
বৈঠকে বিরোধী শিবির মূলত গুরুত্ব দিয়েছে এসআইআর, দিল্লি বিস্ফোরণ, বিদেশনীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নে। পাশাপাশি সরকার পক্ষ জানিয়েছে, সংক্ষিপ্ত অধিবেশন হলেও তাঁরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করার পরিকল্পনা করেছে। এর পরেই কংগ্রেস অভিযোগ তোলে, কেন্দ্র ইচ্ছাকৃতভাবে অধিবেশনের মেয়াদ কমিয়ে সংসদকে কার্যত অচল করে দেওয়ার পথে হাঁটছে।
শীতকালীন অধিবেশন সোমবার শুরু হয়ে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। কার্যদিবস মাত্র ১৫টি— সাম্প্রতিক সময়ের হিসেবে তা যথেষ্ট কম। বৈঠকের পর কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ তোলেন। ‘এই শীতকালীন অধিবেশন কার্যত ১৫ দিনের। এটাই সম্ভবত সবচেয়ে ছোট অধিবেশন। সরকার নিজেই যেন সংসদীয় রীতি-নীতি কবর দিতে চাইছে।’ গগৈ আরও বলেন, ‘দিল্লি বিস্ফোরণের পর নিরাপত্তার ব্যর্থতা, ভোটার তালিকা সুরক্ষা, দূষণজনিত স্বাস্থ্য সংকট, অর্থনীতি থেকে শুরু করে বিদেশনীতি— অসংখ্য জটিল ইস্যু আছে। অথচ সরকার আলোচনা চায় না বলেই অধিবেশন ছোট করেছে।’
এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সব দলকে ‘সংযত থাকার’ আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘শীতকাল, তাই আশা করি সবাই ঠান্ডা মাথায় কাজ করবেন। বিতর্ক হবে, সেটাই সংসদের কাজ। কিন্তু অযথা উত্তেজনা বা বিশৃঙ্খলা আমরা চাই না।’ রবিবার রিজিজু পৃথকভাবে নানা দলের ফ্লোর লিডারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দিনের শেষাংশে ব্যবসা পরামর্শ কমিটির বৈঠকও আয়োজন করার কথা ছিল।
এই অধিবেশনে ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশের পরিকল্পনা সরকারের। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য— অ্যাটমিক এনার্জি বিল, ২০২৫, হায়ার এডুকেশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া বিল, ২০২৫, জন বিশ্বাস (সংশোধন) বিল, ২০২৫, ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাংকরাপ্সি কোড সংশোধনী বিল, মণিপুর জিএসটি (দ্বিতীয় সংশোধন) বিল, রিপিলিং অ্যান্ড অ্যামেন্ডিং বিল, ন্যাশনাল হাইওয়েজ (সংশোধন) বিল, কর্পোরেট ল’স (সংশোধন) বিল, সিকিউরিটিজ মার্কেটস কোড বিল, ইনসিওরেন্স লজ সংশোধনী আরবিট্রেশন অ্যান্ড কনসিলিয়েশন সংশোধনী বিল, সেন্ট্রাল এক্সসাইজ সংশোধনী, হেলথ অ্যান্ড ন্যাশনাল সিকিউরিটি সেস বিল।