‘ভুখা’ এ দেশে ৮৩ শতাংশ সাংসদই কোটিপতি!

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র (Photo: IANS)

দিল্লি, ২১ মার্চ – ২০১১ সালের জনগণনার সময়ের হিসেব বলছে দেশের প্রায় ২১.৯ শতাংশ লোক দরিদ্রসীমার নীচে বাস করে। সাম্প্রতিক কালে রঙ্গরাজন কমিটি দ্বারা দারিদ্রতার নতুন সীমা ঠিক করার পর দেশে দরিদ্রের সংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ। হিসেব বলছে, দেশে এখন দারিদ্রসীমার নিচে বাস কর এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় চল্লিশ কোটি ছুঁই ছুঁই। আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে মোট যেসব শিশু দারিদ্রসীমার নীচে বাস করে, তার ৬৮ শতাংশের বাস ভারতে। দেশে বেকারত্বের হার বিগত চার দশকে সবচেয়ে বেশি। কৃষক আত্মহত্যা তো পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে। ২০১৮ ‘গ্লোবাল হাঙ্গার ইন্ডেক্সে’ ভারতের স্থান ১১৯টি দেশের মধ্যে ১০৩। দেশের প্রায় ২০ কোটি লোক অপুষ্টির স্বীকার। দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন সংস্থানের নিশ্চয়তাও নেই তাদের।

এহেন ‘ভুখা’ এ দেশের ৫৪৫ জন সাংসদের মধ্যে ৪৩০ জনই কোটিপতি! এমন মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া রিপোর্টই বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস বা এডিআর ও ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচ। ২০১৪ সালের যেসব প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছিলেন তাঁদের সম্পত্তির সমীক্ষা করে ওই রেপোর্ট প্রকাশ করা হয়। রিপোর্টে দেশের ৫৪৩টি লোকসভার ৫২১ জন সাংসদের বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে। ২২টি আসন বর্তমানে ফাঁকা।

রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, দেশের ৮৩ শতাংশ সাংসদ কোটিপতি। এই তালিকায় সবচেয়ে বেশি জন বিজেপি’র। পদ্ম শিবিরের ২৬৭ জন সাংসদের মধ্যে ২২৭ জন কোটিপতি। কংগ্রেসের ৪৫ জন সাংসদের মধ্যে আবার ৩৭ জন কোটিপতি সাংসদ। তৃতীয় স্থানে এআইএডিএমকে। তাদের ৩৭ জানের মধ্যে ২৯ জন কোটি টাকার মালিক। তৃণমূলের ৩৪ জনের মধ্যে ২২ জন কোটিপতি।


গড়ে হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে ৫২১ জন সাংসদের সম্পত্তির পরিমাণ ১৪.৭২ কোটি টাকা। বিজেপি, কংগ্রেস, এআইএডিএমকে ও তৃণমূলের সাংসদদের আলাদাভাবে গড় সম্পত্তির পরিমাণ যথাক্রমে ১১.৮৯ কোটি, ৬.৪৭ কোটি ও ২.৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩২ জন সাংসদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫০ কোটির বেশি। দেশের মধ্যে ধনী সাংসদ টিডিপি’র জয়দেব গাল্লা। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৬৪৩ কোটি টাকা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছেন টিআরএস সাংসদ কোনডা বিশ্বেশ্বর রেড্ডি (৫২৮ কোটি) এবং বিজেপি সাংসদ গোকারাজু গঙ্গা রাজু (২৮৮ কোটি)

আবার এই রিপোর্ট অনুযায়ী ৩৩ শতাংশ (১৭৪ জন) সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে। খুন, নারী নির্যাতন, অপহরণের মামলা চলছে ১০৬ জন সাংসদের বিরুদ্ধে। ১০ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে খুনের অভিযোগ। এর মধ্যে চারজন বিজেপি’র, ২ জন কংগ্রেস, ১ জন করে এনসিপি, এলজেপি, আজেডি ও স্বাভিমানী প্রকাশ দলের।