গত চার বছরে যত জন পরীক্ষার্থী এনআইওএস মুক্ত বিদ্যালয় থেকে পড়ে মাধ্যমিক দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে ৭০ শতাংশই পাশ করতে পারেননি। যারা পাশ করেছেন তাঁরাও খুব খারাপ নম্বর পেয়েছেন। তথ্যের অধিকার আইনের অধীনে করা একটি আবেদনের (আরটিআই) উত্তরে কেন্দ্র এনআইওএস বোর্ড-সংক্রান্ত এই তথ্য পেশ করেছে।
একটি সংবাদসংস্থার প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, আরটিআইয়ের জবাবে দিল্লির শিক্ষা দপ্তর (ডিইও) জানিয়েছে যে, গত চার বছরে যত জন ছাত্রছাত্রী দূরশিক্ষায় দশম শ্রেণির পরীক্ষা দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে গড়ে ৭০ শতাংশই পাশ করতে পারেননি। ২০২৪ সালে এনআইওএস প্রকল্পের অধীনে ৭,৭৯৪ জন পড়ুয়া দশম শ্রেণির পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। তার মধ্যে মাত্র ৩৭ শতাংশ, অর্থাৎ ২,৮৪২ জন পরীক্ষায় পাশ করেছেন। ২০২১ সালে ১১,৩২২ জনের মধ্যে ২,৭৬০ জন, ২০২২ সালে ১০,৫৯৮ জনের মধ্যে ৩,৪৮০ জন এবং ২০২৩ সালে ২৯,৪৩৬ জনের মধ্যে মাত্র ৭,৬৫৮ জন পড়ুয়া পাশ করেছেন। সুতরাং, গত চার বছরে এনআইওএস বোর্ড থেকে দূরশিক্ষায় মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছেন মাত্র ৩০ শতাংশ পড়ুয়া।
উল্লেখ্য, নবম ও দশম শ্রেণিতে স্কুলছুট এবং ফেলের হার কমাতে ১৯৮৯ সালে দিল্লি সরকার এই প্রকল্পটি চালু করে। মাধ্যমিকে যারা ফেল করেছে কিংবা পড়াশুনোয় অপেক্ষাকৃত দুর্বল পড়ুয়ারা এনআইওএস বোর্ডের পরীক্ষায় বসতে পারেন। তাঁদের আলাদা করে ক্লাসও করানো হয়। এই প্রকল্পে নথিভুক্ত পড়ুয়াদের প্রতি বিষয়ের জন্য ৫০০ টাকা পরীক্ষার ফি দিতে হয়। কোনও বিষয়ে যদি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষাও থাকে সেক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয়বাবদ আরও ১২০ টাকা করে দিতে হয়। এছাড়াও, পাঁচটি বিষয়ের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি হিসাবে ৫০০ টাকা এবং ট্রান্সফার অফ ক্রেডিটের জন্য প্রতি বিষয়ের ক্ষেত্রে ২৩০ টাকা করে দিতে হয় পরীক্ষার্থীদের। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান প্রকাশ হতেই শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা সোচ্চার হয়েছেন।
অল ইন্ডিয়া পেরেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তথা দিল্লি হাই কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অশোক আগরওয়াল একটি সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ‘দরিদ্র পরিবার থেকে লেখাপড়ায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল যে সবপড়ুয়ারা সরকারি স্কুলে পড়তে আসে, স্কুলগুলি তাদের এনআইওএসে ভর্তি করায়। সামগ্রিক ভাবে দশম শ্রেণির ফল ভালো করার জন্যই সরকারি স্কুলগুলি পড়ুয়াদের বেছে বেছে এনআইওএসে পাঠায়।’ অনেক অভিভাবক দাবি করেছেন, অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের তুলনায় এনআইওএস-এর পাঠ্যক্রম অনেকটাই নিম্নমানের। এই বোর্ডে পাঠরত পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে আসছে।