বড়সড় সাফল্য পেল তেলেঙ্গানা পুলিশ। তেলেঙ্গানায় মাওবাদী দমন অভিযানে একসঙ্গে ৩৭ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করলেন পুলিশের কাছে। এঁদের মধ্যে আছেন আঞ্চলিক কমিটির তিন জন শীর্ষ নেতা। শনিবার তেলেঙ্গানা পুলিশের ডিজিপি শিবধর রেড্ডির কাছে তাঁরা অস্ত্র-সহ আত্মসমর্পণ করেন ওই ৩৭ জন মাওবাদী। পুলিশ জানিয়েছে, এই ৩৭ জনের মাথার মোট মূল্য ছিল প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।
কোয়াদা সম্বিয়া ওরফে আজাদ, আপ্পাসি নারায়ণ ওরফে রমেশ, মুচাকি সোমাদা প্রমুখ রয়েছেন আত্মসমর্পণকারী নেতাদের মধ্যে। আজাদ এবং রমেশ তেলেঙ্গানায় মাওবাদীদের আঞ্চলিক কমিটির দায়িত্বে ছিলেন। এই দু’জনেরই মাথার মূল্য ছিল ২০ লক্ষ টাকা করে।
পাশাপাশি দণ্ডকারণ্য আঞ্চলিক কমিটির নেতা হিসেবে পরিচিত সোমাদা। সেই সঙ্গে আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে আরও রয়েছেন ডিভিশনাল কমিটির তিন সদস্য এবং বিভিন্ন এরিয়া কমিটির ৯ জন। নিজেদের অস্ত্র জমা দিয়েছেন পুলিশের কাছে, এর মধ্যে আছে, দু’টি এসএলআর, চারটি ৩০৩ রাইফেল, একটি জি–৩ রাইফেল, একটি একে-৪৭ রাইফেল এবং মোট ৩৪৬ রাউন্ড গুলি।
রাজ্যের ডিজিপি শিবধর রেড্ডি জানিয়েছেন, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি মাওবাদীদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরার যে আহ্বান জানিয়েছেন, তাতে সাড়া দিয়ে এই ৩৭ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। পাশাপাশি পুলিশের ধারাবাহিক অভিযান, সংগঠনের ভিতরে মতবিরোধ এবং নেতৃত্বের লড়াই, এসব কারণেও অনেক মাওবাদী দলে থাকার আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্র ঘোষণা করেছে, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে দেশ থেকে মাওবাদী নেটওয়ার্ক পুরোপুরি নির্মূল করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। একই বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিসগড়, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের মাওবাদী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে গত কয়েক মাস ধরে টানা অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। কিছুদিন আগে অন্ধ্রপ্রদেশের জঙ্গলে একটি অভিযানে নিহত হন মাওবাদীদের কুখ্যাত নেতা মাদ্ভী হিডমা। একের পর এক সফল অভিযানের পর এই গণআত্মসমর্পণ নিরাপত্তাবাহিনীর বড় সাফল্য হিসেবেই দেখছে নানা মহল।