আবার ছত্তিসগড়ে মাওবাদী দমন অভিযানে যৌথ বাহিনী। জঙ্গলের মধ্যে পুলিশে-মাওবাদী গুলির লড়াই। এই গুলির লড়াইয়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এলাকা। রবিবার সকালে ছত্তিসগড় পুলিশ জানিয়েছে, বিজাপুর জেলায় গুলির লড়াইয়ে ৩১ জন মাওবাদীর নিহত হয়েছেন। তবে পাল্টা হামলায় দু’জন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যেরও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে । গুরুতর আহত আরও ২। সপ্তাহখানেক আগেই এই বিজাপুরেই যৌথ বাহিনীর ‘এনকাউন্টারে’ ৮ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছিলো।
শনিবার রাত থেকে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিলো ছত্তিসগড়। সে রাজ্যের বিজাপুর জেলার মাওবাদী প্রবণ এলাকায় একটি যৌথ অভিযান চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ছত্তিসগড় পুলিশের একটি দল। এদের সঙ্গী হয় কোবরা ইউনিটের সদস্যরাও। রাতের অন্ধকারেই ঘন জঙ্গলের মধ্য়ে অভিযানে নেমেছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বিপদ বুঝেই এলাকা ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করে মাওবাদীরা। কিন্তু ততক্ষণে গোটা জঙ্গলই চলে এসেছে নিরাপত্তারক্ষীদের জিম্মায়। তাদের চারপাশ দিয়ে ঘিরে ধরে পুলিশি বাহিনী। এরপর শুরু হয় গুলিবৃষ্টি। খতম হয়েছেন ৩১ জন মাওবাদী। ঘটনায় শহীদ ২ দুই নিরাপত্তারক্ষী।
এই প্রসঙ্গে বলা হয় গত কয়েক বছরে দেশ থেকে মাওবাদীদের উৎখাত করার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বারবার ঘোষণা করেছেন, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ মাওবাদীদের দেশের মাটি থেকে চিরতরে নির্মূল করা হবে। মাওবাদীদের আত্মসমর্পণেও উৎসাহিত করা হয়েছে, যারা আত্মসমর্পণ করবেন, তাদের জন্য চাকরি এবং অন্যান্য সরকারি সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
গত বছর সরকারের হিসেব অনুযায়ী, ২০৭ জন মাওবাদী নিহত হয়েছেন এবং উদ্ধার হয়েছে বহু অস্ত্রশস্ত্র। বিশেষ করে বস্তার ডিভিশনে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর অভিযান তীব্র হয়েছে। ৩ জানুয়ারি থেকে নতুন করে মাওবাদী দমন অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযানের আওতায় বিজাপুর, সুকমা, নারায়ণপুর, দন্তেওয়াড়া, জগদলপুর, কাঁকের এবং কোন্ডাগাঁও জেলার পাহাড়-জঙ্গল এলাকায় চলছে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান। পাশাপাশি, মাওবাদী গেরিলাদের মূল স্রোতে শামিল হওয়ার জন্য চলছে ধারাবাহিক প্রচার অভিযান। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যেই আত্মসমর্পণ করেছেন গান্ধী তাঁতি ওরফে কমলেশ এবং মাইনু ওরফে হেমলাল কোররাম, রঞ্জিত লেকামি ওরফে অর্জুন এবং তাঁর স্ত্রী কোসি ওরফে কাজলের মতো মাওবাদী নেতা-নেত্রীরা।
এছাড়া, মাওবাদী গেরিলাদের মূল স্রোতে ফিরে আসার জন্য প্রচার অভিযানও চালানো কাজ চলছে সমানতালে। ইতিমধ্যেই কয়েকজন মাওবাদী নেতা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাদের মধ্যে গান্ধী তাঁতি ওরফে কমলেশ, মাইনু ওরফে হেমলাল কোর্রাম, রঞ্জিত লেকামি ওরফে অর্জুন এবং তার স্ত্রী কোসি ওরফে কাজল অন্যতম। এই আত্মসমর্পণগুলি সরকারের মাওবাদী দমন অভিযানে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।