৩০০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এখনও নিখোঁজ

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হয়েছে ২ হাজার ৯০০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট।গোয়েন্দাদের
অনুমান, আরও ৩০০  কেজি বিস্ফোরকের হদিশ এখনও পাওয়া যায়নি। তা ছড়িয়ে থাকতে
পারে দেশের অন্যত্র। লালকেল্লার গাড়ি বিস্ফোরণের তদন্তে এমন তথ্যই উঠে আসছে।
এই তথ্য মেলার পরই একাধিক রাজ্যে নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

সেগুলি শনাক্ত করতে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তল্লাশি। বিভিন্ন রাজ্যেও চালানো হচ্ছে অভিযান।
তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিকের কথায়,’পরিস্থিতি এখনও সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়।

এই অবশিষ্ট বিস্ফোরকের সম্ভাব্য ব্যবহার রোধ করতে তদন্তকারী সংস্থাগুলি বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।  

সূত্রের খবর, এই নিখোঁজ ৩০০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এখন তদন্তকারীদের কাছে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিখোঁজ এই বিস্ফোরকের সন্ধান এবং তা উদ্ধার করাকে সবথেকে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি এই নিখেঁজ বিস্ফোরক যাদের কাছে রয়েছে তাদেরও শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গোপন আস্তানা থেকে প্রায় ৩ টন বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে তদন্তকারীদের বিশ্বাস, আরও বিস্ফোরক গোপন কোনও জায়গায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে। 
 
সূত্রের খবর, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বাংলাদেশ, নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল। গ্রেপ্তার হওয়া সন্ত্রাসবাদীরা সীমান্ত পেরিয়ে এই বিস্ফোরক পাচার করে। একটি সার প্রস্তুতকারক সংস্থার থেকে এই বিস্ফোরক চুরি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। গোপন সূত্রেই জানা যায়, মোট ৩ হাজার ২০০ কেজি বিস্ফোরক ভারতে নিয়ে আসা হয়েছিল। এজন্য বিভিন্ন রাস্তা এবং সীমান্ত এলাকাতেও চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। 
 
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে, সন্ত্রাসবাদীরা অযোধ্যা, বারাণসী-সহ উত্তরপ্রদেশের ধর্মীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এই শহরগুলি ছাড়াও লাল কেল্লা, ইন্ডিয়া গেট, কনস্টিটিউশন ক্লাব, গৌরী শঙ্কর মন্দির, প্রধান রেলস্টেশন গুলি এবং শপিং মলগুলিও তাদের নজরে ছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ষড়যন্ত্র চলছিল ২০২৫-এর জানুয়ারি থেকে, লক্ষ্য ছিল, ২৬/১১ মুম্বই হামলার আদলে হামলা চালানো। তদন্তকারীদের মতে, দিল্লি, গুরুগ্রাম, এবং ফরিদাবাদ জুড়ে একযোগে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য ২০০টিরও বেশি তীব্র উচ্চতাসম্পন্ন আইইডি তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিল সন্ত্রাসবাদীরা।
 
তদন্তকারীদের আশঙ্কা, নিখোঁজ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আরেকটি বড় সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। এজন্য সংবেদনশীল এলাকা এবং ধর্মীয় স্থানগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে যে, এই নেটওয়ার্ক উত্তর ভারতে গভীরভাবে বিস্তৃত ছিল, যার মধ্যে ছিল আন্তঃসীমান্ত চোরাচালানের পথও।
 
সূত্রের খবর, দিল্লিতে লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণে ব্যবহার করা গাড়ি ও আল ফালাহ-র চিকিৎসক শাহিন শাহিদের আগ্নেয়াস্ত্র বোঝাই গাড়ি ছাড়াও আরও ২টি গাড়ি ছিল সন্দেহভাজন জঙ্গিদের কাছে। সূত্রের খবর, তার মধ্যে একটি গাড়ি উমরের নামে নিবন্ধিত। পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়িটি একটি লাল রঙের ফোর্ড ইকোস্পোর্টস। ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর রাজৌরি গার্ডেন আরটিও-তে গাড়িটি উমরের নামে নথিভুক্ত হয় । এই লাল ফোর্ড ইকোস্পোর্টসের সঙ্গে আরও একটি গাড়ির খোঁজেও তল্লাশী চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের অনুমান, ওই ২ গাড়িতেও মজুত রয়েছে আরও কিছু বিস্ফোরক এবং আগ্নেয়াস্ত্র।