যানজটে আটকে মৃত ৩

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

গত শুক্রবার ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে এবং রাস্তায় জল জমার কারণে যানজট শুরু হয় মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের ৮ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে। প্রায় ৪ হাজার গড়ি ৪০ ঘন্টার জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে এই যানজটে। যানজটে আটকে পড়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় ৩জনের। এই ঘটনার জেরে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এনএইচএআই (জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ)-এর পক্ষ থেকে আদালতের প্রশ্নের উত্তরে বলা হয় যে, মানুষ কাজ ছাড়াই এত তাড়াহুড়ো করে রাস্থায় বেরিয়ে পড়েন কেন? এই মন্তব্য শুনে বিস্মিত হয় গোটা আদালত কক্ষ।

ইন্দোর-দেওয়াস জাতীয় সড়কে চলছিল ছয় লেনের রাস্তা তৈরির কাজ। তার উপর বৃষ্টিপাত ও রাস্তায় জল জমার কারণে প্রচণ্ড যানজট তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই শুরু হয়েছিল যানজট। অভিযোগ উঠেছে যে, অনেকক্ষণ যানজটে আটকে থাকার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন একজন ব্যক্তি। তাঁকে যানজটের মাঝখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ব্যক্তির নাম সন্দীপ প্যাটেল। তিনি ছাড়াও কমল পাঞ্চাল এবং বলরাম প্যাটেল নামের দুই ব্যক্তিও যানজটে আটকে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাঁদের প্রাণরক্ষা করা সম্ভব হয়নি। মধ্যপ্রদেশে এই ঘটনা নিয়ে চলছে তুমুল অশান্তি। হাই কোর্টে দায়ের করা হয়েছে জনস্বার্থ মামলা।

এই মামলার শুনানিতে আদালতের ডাকে এসেছিল দিল্লি ও ইন্দোর অফিস থেকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, ইন্দোর জেলাশাসক কর্তৃপক্ষ, ইন্দোর পুলিশ কমিশনার, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রক। সোমবার মামলার শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি বিবেক রুসিয়া এবং বিচারপতি বিনোদকুমার দ্বিবেদী। যানজটে প্রাণহানি নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা হলে তাঁরা উত্তর দেন যে, মানুষের কোনও কাজ ছাড়া তাড়াহুড়ো করে রাস্তায় বেরোনোর কী আছে? এই মন্তব্য শুনে আদালত কক্ষে শোরগোল ওঠে। আদালত জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এই যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, একথা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।


মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী গিরিশ পটবর্ধন পালটা প্রশ্ন করেন যে, দরকার ছাড়া এত যানজটের মধ্যে কি কেউ শখ করে বেরোয়? তাহলে কি এবার বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে মানুষকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পারমিশন স্লিপ নিতে হবে?

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে আসা মন্তব্যকে অসংবেদনশীল মনে করছেন অনেকেই। বলরাম প্যাটেল নামক মৃত ব্যক্তির ভাইপো সুমিত প্যাটেল এই মন্তব্যে অত্যন্ত অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন ‘শখ করে কোনও কাজ ছাড়া রাস্তায় ঘোরার সময় নেই কারও হাতে। আমরা পরিবারের একজন অসুস্থ মানুষকে বাঁচানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলাম। তাই রাস্তায় নামতে হয়েছিল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির পর এই সব মন্তব্য করলে আর কিছুই বলার থাকে না।’
এরপর পাঁচের পৃষ্ঠায়