রণক্ষেত্র শ্রীনগর হাসপাতাল, মওকা বুঝে বেপাত্তা ২৬ কোভিড ১৯ সন্দেহভাজন

প্রতীকী ছবি (File Photo: IANS/DPRO)

রোগীদের পরিবারের লোকের তাণ্ডবে শনিবার রণক্ষেত্রে পরিণত হল শ্রীনগরের সরকারি হাসপাতাল। সেই সুযোগে হাসপাতাল থেকে প্রতিবাদীদের ভিড়ে মিশে বেপাত্তা হয়ে যান ২৬ রোগী। হাসপাতাল সুত্রে খবর, করোনা’য় আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ওই ২৬ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল।

এই ২৬ জন করোনা পজিটিভ কি না, তার জন্য রিপোর্টের অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু, তাঁদের মধ্যে কয়েক জনও যদি করোনা পজিটিভ হয়ে থাকে, তা হলে করোনার সংক্রমণ যে ভুস্বর্গে ভয়াবহ রূপ নেবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু ওই ২৬ জন বা তাঁদের পরিবার নয়, কাশ্মীরে গণহারে প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াবে।

করোনা সংক্রমণের জেরে শ্রীনগরের সরকার পরিচালিত জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়তে থাকায়, হাসপাতালের অব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ উঠতে থাকে।


অভিযোগ, নামেই সরকারি হাসপাতাল। এখান থেকে রোগীরা কাঙিক্ষত মেডিক্যাল পরিষেবা পাচ্ছেন না। দিন কয়েক ধরে ধিকধিক করে জ্বলা সেই ক্ষোভের আগুনে এদিন ঘৃতাহুতি পড়ে। অব্যবস্থা নিয়ে রোগীর স্বজনদের প্রতিবাদ প্রদর্শনের সময়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সরাতে গেলে, একরকম দাঙ্গা বেধে যায়।

হাসপাতাল চত্বরে তুমুল তাণ্ডব শুরু হয়ে যায়। ভিতরে থাকা আসবাব ভাজুর করা হয়। ভাঙা হয় জানালা-দরজাও। হাসপাতালের বাইরেও মারমুখী হয়ে ওঠেন প্রতিবাদীরা। সেই সুযোগে ওই হাসপাতাল থেকে চম্পট দেয় করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে পর্যবেক্ষণে থাকা ২৬ কাশ্মীরি।

রাত পর্যন্ত ওই পলাতকদের সন্ধান মেলেনি। তবে, শ্রীনগরের ডিসি শাহিদ ইকবাল চৌধুরী আশাবাদী, হাসপাতালের কোয়ারানটিন থেকে পালানো ওই ছাব্বিশ জনের খোঁজ শিগগির মিলবে। ফিরিয়ে আনা হবে হাসপাতালে।

এদিনের ঘটনায় হাসপাতালের এক ডাক্তারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অপর ডাক্তারকে কিছুদিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়। এই দুই ডাক্তারের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়।

ডিরেক্টরেট অফ হেলথ সার্ভিসেস (কাশ্মীর) ডাক্তার মারিয়া জিলানি জানান, বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ওই দুই ডাক্তারকে দ্রুত কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, তাঁরা পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেননি। ডিউটিতে যোগ দেননি। তার জেরে হাসপাতালে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এজন্য ওই ডাক্তারদের বরখাস্ত করা হয়েছে।

জম্মু-কাশ্মীরে এখনও পর্যন্ত ৩৩ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। একজন এর মধ্যে মারাও গিয়েছেন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন অপর একজন।

এদিকে, গোটা দেশে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০২৪, মারা গিয়েছেন ২৪ জন। দেশে সবথেকে বেশি ১৮৬ জন করোনা আক্রান্ত মহারাষ্ট্রে। সেখানে ৬ জন মারাও গিয়েছেন। তার পরেই রয়েছে কেরালা। ১৮২ জন আক্রান্ত হলেও, এখনও পর্যন্ত একজনই সেখানে মারা গিয়েছে।