কুলগামের জঙ্গলে গুলির লড়াইয়ে শহিদ দুই জওয়ান

জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগাম জেলার অখল জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনী এবং জঙ্গিদের মধ্যে রাতভর গুলির লড়াইয়ে শহিদ হয়েছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুই জওয়ান। খতম এক জঙ্গি। ঘটনায় গুরুতর জখম আরও দুই জওয়ান। শনিবার রাতভর এই সংঘর্ষের জেরে উত্তেজনা রয়েছে গোটা অখল এলাকায়।

গত ১ আগস্ট থেকে দক্ষিণ কাশ্মীরের অখল জঙ্গলে ‘অপারেশন অখল’ শুরু করেছে ভারতীয় সেনা, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এবং সিআরপিএফের যৌথ বাহিনী। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শুরু হওয়া এই অভিযানের লক্ষ্য, ওই অঞ্চলে গা ঢাকা দিয়ে থাকা জঙ্গিদের খতম করা। প্রথম দিনেই তিন জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়। এরপর একের পর এক সংঘর্ষে আরও কয়েক জন জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে।

সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতভর সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন চার জওয়ান। তাঁদের শ্রীনগরের সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দুই জওয়ানের মৃত্যু হয়। শহিদ দুই জওয়ানের নাম ল্যান্সনায়েক প্রীতপল সিং ও সিপাই হরমিন্দর সিং। সেনা সূত্রে খবর, তাঁরা গুলিতে আহত হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। অন্য দুই জওয়ান এখনও চিকিৎসাধীন। এখনও পর্যন্ত এই অভিযানে আহত জওয়ানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০।


অপারেশন ‘অখল’-এর অন্যতম চ্যালেঞ্জ হল অখল জঙ্গলের ভৌগোলিক কাঠামো। ঘন জঙ্গলের মধ্যে ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক গুহা। সেনার অনুমান, এই গুহাগুলিকেই আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করছে জঙ্গিরা। তাদের খোঁজে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন, হেলিকপ্টার এবং নাইট ভিশন সরঞ্জাম। অখল গ্রামটি কুলগাম শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গোয়েন্দা রিপোর্টে এই গ্রামেই জঙ্গিদের উপস্থিতির ইঙ্গিত পাওয়ার পরই অভিযান শুরু হয়। তল্লাশির সময় সেনা সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় জঙ্গিরা, যার জেরে শুরু হয় দীর্ঘক্ষণ গুলির লড়াই।

গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ২৬ জনের। ওই হামলার মূল চক্রী সুলেমন ওরফে আসিফ সহ তার দুই সঙ্গী জিব্রান ও হামজা আফগানিকে সম্প্রতি ‘অপারেশন মহাদেব’-এ নিকেশ করে নিরাপত্তাবাহিনী। তিনজনেই পাকিস্তানের নাগরিক বলে জানায় সেনা।

পহেলগাম হামলার পরই সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে ওঠে। সেই পরিস্থিতির মধ্যেই কুলগামের অখল এলাকায় শুরু হয় নতুন অভিযান। সেনা সূত্রে খবর, যতক্ষণ না শেষ জঙ্গিকেও নিকেশ করা হচ্ছে, ততক্ষণ অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বাহিনীর। নিরাপত্তার স্বার্থে অখল গ্রাম এবং সংলগ্ন এলাকাগুলিতে জারি রয়েছে কড়া নজরদারি।