করোনা সংকটে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন মুসলিমরা, উদ্বেগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি ১০১ জন প্রাক্তন আমলার

নিজামুদ্দিনের জমায়েতে অংশ নেওয়া মানুষদের স্বাস্থপরীক্ষা চলছে। (File Photo: IANS)

অনুষ্ঠান করে নিন্দনীয় কাজ করেছে তবলিগি জামাত। কিন্তু ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একশ্রেণির মিডিয়া যেভাবে মুসলিমদের প্রতি বিষ ছড়িয়ে চলেছে, তা চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন ও আপত্তিকর। দেশে করোনা সঙ্কটের সময় যেভাবে মুসলিমদের ‘হেনস্থা; করা হচ্ছে, তাতে উদ্বেগ জানিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এমনই চিঠি লিখেছেন ১০১ জন প্রাক্তন আমলা।

চিঠিতে লেখা হয়েছে, অতিমহামারীর ফলে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ভয় ও অনিশ্চয়তা। এই সময় দেশের নানা স্থানে মুসলিমদের পাবলিক প্লেস থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, মুসলিমদের দূরে রাখতে পারলে তবেই বাকিরা নিরাপদে থাকবে।

যে মুখ্যমন্ত্রীরা এই অতিমহামারীর সময় ধর্মনিরপেক্ষ মনোভাব নিয়ে কাজ করছেন, তাঁদের প্রশংসা করেছেন আমলারা। তাঁরা বলেন, অতিমহামারী আমাদের সামনে যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে, তা কেবল ঐক্যবদ্ধভাবেই আমরা মোকাবিলা করতে পারি।


আমলারা বলেছেন, তাঁরা বিশেষ কোনও রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু ভারতের সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করতে চান। চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, আমরা উদ্বগের সঙ্গে লক্ষ করছি, দেশের কয়েকটি অঞ্চলে মুসলিমরা হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে দিল্লির নিজামুদ্দিন অঞ্চলে তবলিগি জামাতের অনুষ্ঠানের পরেই এমনটা ঘটছে।

আমলাদের বক্তব্য, মার্চ মাসে শুধু যে তবলিগি জামাতেরই অনুষ্ঠান হয়েছিল এমন নয়। ওই সময় আরও রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জমায়েত হয়েছে। কিন্তু তবলিগি জামাতের অনুষ্ঠানের ওপরে সাম্প্রদায়িক রঙ লাগানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ওই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল দেশের নানা প্রান্তে কোভিড ১৯ ছড়িয়ে দেওয়া।

প্রাক্তন আমলারা জানতে পেরেছেন, অনেকক্ষেত্রে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মুসলিমদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার ওপরে অতিমহামারীর সময় সরকার যে বাড়তি রেশন ও অর্থ বরাদ্দ করেছে, তাও অনেকক্ষেত্রে মুসলিম পরিবারগুলি পাচ্ছে না।

চিঠিতে লেখা হয়েছে, যে মুসলিম দেশগুলির সঙ্গে ভারত বরাবর ভাল সম্পর্ক রেখে চলে, তারা অনেকে মুসলিমদের হেনস্থা করা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। ওই দেশগুলিতে লক্ষ লক্ষ ভারতীয় নাগরিক বাস করেন। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যাতে সংখ্যালঘুরা ভারতে আতঙ্কের মধ্যে না থাকেন।

চিঠির নীচে যাদের স্বাক্ষর আছে, তাঁদের মধ্যে আছেন মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সচিব কে এম চন্দ্রশেখর, প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এ এস দৌলত এবং জুলিও রেবেইরো, প্রাক্তন মুখ্য তথ্য কমিশনার ওয়াজাহাত হবিবুল্লা, দিল্লির প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জং প্রমুখ।