ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে ব্যায়ামের সেরা সময় ৪০-এর পর, বলছে গবেষণা

ডিমেনশিয়া কোনও একক রোগ নয়। এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে ধীরে ধীরে মানুষের স্মৃতিশক্তি, চিন্তাভাবনা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ও দৈনন্দিন কাজ করার দক্ষতা কমে যায়। মূলত মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণে এই রোগটি হয়ে থাকে। আলজাইমার রোগ ডিমেনশিয়ার সবচেয়ে পরিচিত ও সাধারণ ধরন। তবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, সঠিক জীবনধারণ এবং ব্যায়াম অনুসরণ করে ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে ব্যায়াম অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ হলেও, কোন বয়স থেকে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে তা নিয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে ‘জামা নেটওয়ার্ক ওপেন’-এ প্রকাশিত ‘ফ্রেমিংহাম হার্ট স্টাডি’। এই গবেষণায় জানানো হয়েছে, মধ্যবয়স অর্থাৎ ৪৫–৬৪ বছর ও বৃদ্ধ বয়স অর্থাৎ ৬৫ বছরের পর নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।

গবেষণায় প্রায় ৩৭ বছর ধরে অংশগ্রহণকারীদের অনুসরণ করা হয়েছে। তাঁদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে শারীরিক কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যাঁরা মধ্য ও শেষ জীবনে সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন, তাঁদের ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি ৪০-৪৫ শতাংশ পর্যন্ত কম। অন্যদিকে, প্রাথমিক প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ব্যায়াম সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও, ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে তার কোনও শক্তিশালী পৃথক প্রভাব পাওয়া যায়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার মতো সমস্যা সাধারণত মধ্যবয়সের পর বাড়তে থাকে, যা মস্তিষ্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই সময়ে নিয়মিত ব্যায়াম রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, প্রদাহ কমায় এবং মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। দ্রুত হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার, নাচ কিংবা নিয়মিত গৃহস্থালির কাজ, এমনকি মাঝারি মাত্রার ব্যায়ামই ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে কার্যকর। বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট শারীরিক কার্যকলাপ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। সঠিক বয়সে ব্যায়াম বা শরীরচর্চা ডিমেনশিয়া প্ৰতিরোধ করতে পারে বলে জানা গিয়েছে।