সমীক্ষা বলছে বর্তমানে বেশিরভাগ পুরুষই টাইপ-টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। কিন্তু ৬৫ বছরের পর পুরুষদের অনুপাতে মহিলাদের টাইপ-টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিদিন বাড়ছে ব্লাড-সুগারের রোগী। কিন্তু আশঙ্কার কথা হল, অ্যালোপ্যাথি ওষুধের দীর্ঘ চিকিৎসাতেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না এই মধুমেহ রোগ। এদিকে ব্যয় বহুল চিকিৎসার জেরে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তাই অনেকেই ভরসা রাখা শুরু করেছেন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায়।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে বড় ভূমিকা নেবে হ্যোমিওপ্যাথি। সম্প্রতি এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সাড়া ফেলেছে। আর এর সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে রাজ্যের এক তরুণ মেডিক্যাল পড়ুয়ার নাম৷ কাটোয়ার কুর্চি গ্রামের ছেলে অন্তিম বর্ষের পড়ুয়া চিকিৎসক অভিদীপ্ত হাজরা। ‘হাই ব্লাড সুগারের ক্ষেত্রে অ্যাভোগ্যাড্রো সীমার উপরে অতি তরলীকৃত হোমিওপ্যাথি ওষুধের চিকিৎসামূলক উপকারিতা’- এই ছিল তাঁর গবেষনার বিষয়। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ওই অন্তিম বর্ষের পড়ুয়া চিকিৎসক সাফল্য পেয়েছেন ৷ সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই গবেষণার জন্য দিল্লিতে আয়ুষ মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় হ্যোমিওপ্যাথি অনুসন্ধান পরিষদের (সিসিআরএইচ) পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক হোমিওপ্যাথি দিবসে পুরষ্কৃতও করা হবে তাঁকে।
সারা দেশে মাত্র কয়েকজনকেই এই পুরস্কার দেওয়া হবে, যার মধ্যে অভিদীপ্ত অন্যতম। তিনি প্রফেসর ডা: দেবর্ষি দাসের তত্ত্বাবধানে গবেষণা সম্পন্ন করেছেন। গবেষণার ফলে আশা করা হচ্ছে ব্লাড সুগাররের মাত্রাকে নিশ্চিতভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।
বর্তমানে কলকাতা মেট্রোপলিটন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অন্তিম বর্ষের ছাত্র অভিদীপ্ত৷ তিনি আশাবাদী তাঁর গবেষণার ফলাফল অতি-তরলীকৃত হোমিওপ্যাথি ওষুধের অধিক কার্যকারিতার প্রতি মানুষের ভরসা তৈরি করবে।
বিশিষ্ট গ্রিক বিজ্ঞানী ডা. ভিদোলকাসের অতি-তরলীকৃত মেডিসিনের ওপর গবেষণা, সাম্প্রতিক সময়ে সারা বিশ্বময় আলোড়ন ফেলেছিল। অভিদীপ্ত বলেন, ‘পড়াশোনা ও গবেষণা নিয়ে আমার শিক্ষা-জীবন। আমার গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল থেকে আমি আশাবাদী, ব্লাড সুগারকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে৷ আমার বাবা কুশীনাভ হাজরা একজন সাধারণ কৃষক, আর মা ফাল্গুনী হাজরা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী।’ ২০২০ সালে নিট পাশ করে কলকাতা মেট্রোপলিটন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হন অভিদীপ্ত। তাঁর প্রফেসর ডা. দেবর্ষি দাস বলেন, অভিদীপ্ত ভীষণ ভালো কাজ করছে। হোমিওপ্যাথিতে এই ধরনের গবেষণার ভীষণ প্রয়োজন। আশা রাখছি আমাদের এই গবেষণা অতিরিক্ত ব্লাড-সুগার নিয়ন্ত্রণে অতি-তরলীকৃত হোমিওপ্যাথি ঔষধের চিকিৎসামুলক উপকারীতাকে তুলে ধরবে।’
উল্ল্যেখ্য, ২০২৩ সালে রক্তাল্পতার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ওষুধের ভূমিকা নিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য অভিদীপ্তকে দিল্লির যশোভুমিতে, পুরস্কার প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ।