কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক দেশের ৭৫০টিরও বেশি জেলা হাসপাতালে, মোট ২০০টি ডে-কেয়ার ক্যান্সার কেন্দ্র স্থাপন শুরু করেছে। ‘আমরা এই ৭৫০টিরও বেশি জেলা হাসপাতালের জন্য সমীক্ষা শুরু করেছি। বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা সেগুলিকে উন্নত করার পরিকল্পনা করেছি। তারপর আমরা ডে-কেয়ার ক্যান্সার কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করব’, বলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব পুণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ আগামী তিন বছরের মধ্যে সমস্ত জেলা হাসপাতালে ডে-কেয়ার ক্যান্সার কেন্দ্র স্থাপনের কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই অনুযায়ী সরকার আগামী তিন বছরের মধ্যে সমস্ত জেলা হাসপাতালে ডে-কেয়ার ক্যান্সার কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা করবে। ২০২৫-২৬ সালে ২০০টি কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, এই ডে-কেয়ার ক্যান্সার কেন্দ্রগুলি স্থাপনের জন্য আগামী তিন বছরে মোট আনুমানিক ব্যয় হবে ৩২০০ কোটি টাকা।
ডে-কেয়ার ক্যান্সার কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্য হল, প্রয়োজনীয় ক্যান্সার পরিষেবাগুলি বাড়িতে নিয়ে আসা, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে যারা কম পরিষেবা পান তাঁদের জন্য।
কেমোথেরাপি পরিষেবা প্রদান এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ ও সচেতনতা কর্মসূচি পরিচালনার দিকেও মনোনিবেশ করা হয়েছে। দেশে ক্যান্সারের কারণে ক্রমবর্ধমান অসুস্থতা দেখা দিয়েছে, যা বর্তমানে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের ১.৬ লক্ষ আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দিরে ৩০ বছরের বেশি বয়সি ব্যক্তিদের জন্য ক্যান্সার স্ক্রিনিং-এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক গত দশকে, ১৯টি রাজ্য ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এবং ২০টি টারশিয়ারি ক্যান্সার কেয়ার সেন্টারের জন্য ৩০০০ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। ২২টি নতুন অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস)-এর সবকটিতেই ক্যান্সার চিকিৎসার সুবিধা অনুমোদিত হয়েছে।
বাজেটে নির্বাচিত ক্যান্সার ও অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী ওষুধের উপর সম্পূর্ণ ছাড় ও ছাড়ের শুল্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শ্রীবাস্তব বলেন, ‘২০১৫ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য বাজেটে, বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ ১৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি অর্থবছরে মন্ত্রককে ৯,৪০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।’
আয়ুষ্মান ভারত-প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা (এবি-পিএমজেএওয়াই) প্রকল্পের আওতায় মহিলারা মোট ক্যান্সারের ৪৭% চিকিৎসা করেছেন, যার মূল্য ১৯,৭৩৭ কোটি টাকা। বিশ্বের বৃহত্তম বিমা প্রকল্প হিসাবে বিবেচিত পিএমজেএওয়াই-এর অধীনে করা চিকিৎসার ৩৫%-ই ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট। এই প্রকল্পে মধ্যম ও তৃতীয় পর্যায়ের হাসপাতালে ভর্তির জন্য পরিবার পিছু প্রতি বছর ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়।
মন্ত্রক জানিয়েছে আয়ুষ্মান ভারতের আওতায় থাকা নাগরিকদের জন্য সময়মতো ক্যান্সারের চিকিৎসা ৯০% বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালের গ্লোবাল ক্যান্সার অবজারভেটরির তথ্য অনুযায়ী, ভারতে পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার হল মুখের গহ্বর, ফুসফুস এবং খাদ্যনালীর ক্যান্সার, যেখানে মহিলাদের মধ্যে স্তন, জরায়ুমুখ এবং ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, এই ডে-কেয়ার ক্যান্সার কেন্দ্রগুলি স্থাপনের জন্য আগামী তিন বছরে মোট আনুমানিক ব্যয় হবে ৩২০০ কোটি টাকা। ডে-কেয়ার ক্যান্সার কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্য হল প্রয়োজনীয় ক্যান্সার পরিষেবাগুলি বাড়ির নিকটে নিয়ে আসা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে যারা কম পরিষেবা পান, তাঁদের জন্য। বর্তমানে কেমোথেরাপি পরিষেবা প্রদানের দিকেও মনোনিবেশ করা হচ্ছে।