১ ডিসেম্বর দিনটিকে বিশ্ব এইডস দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনটি বিশ্বজুড়ে ১৯৮৮ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে। এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, আক্রান্তদের প্রতি সংহতি প্রকাশ ও এই রোগের কারণে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের স্মরণ করাই হল এই দিনটি পালনের মূল উদ্দেশ্য। ২০২৫ সালের বিশ্ব এইডস দিবসের থিম হল বৈষম্য দূরীকরণ, এইডস সমাপ্তিকরণ। এইডস সম্পর্কে মানুষের মধ্যে একাধিক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। শরীরে এইচআইভি ভাইরাস কীভাবে প্রবেশ করে ও কীভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে তা নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। সেই কারণে এই রোগে আক্রান্তরা বৈষম্যের শিকার হন। তা দূর করতে আগে এইচআইভি ও এইডস সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা জরুরি। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এইডসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়েছে। সেই কারণে এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ভ্রান্ত ধারণা: এইচআইভি আর এইডস – দুটো একই জিনিস।
সত্য: এইচআইভি হল একটি ভাইরাস, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আক্রমণ করে। দীর্ঘদিন ধরে এই ভাইরাস শরীরে বাসা বাঁধলে কোনও মানুষ এইডস রোগে আক্রান্ত হন। এই সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি এই রোগ প্রাণঘাতীও হতে পারে। এইআইভি পজিটিভ হওয়ার মানেই যে সেই রোগী এইডস আক্রান্ত হবেন এরকম কোনও কথা নেই। এইচআইভি পজিটিভ রোগী বর্তমানে ওষুধের সহায়তায় সহজেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপির কারণে এইচআইভি পজিটিভ রোগীরা দীর্ঘ, স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন। নিয়ন্ত্রণে থাকে রোগও।
ভ্রান্ত ধারণা: দৈনন্দিন সংস্পর্শে এইচআইভি ছড়ায়
সত্য: সাধারণ স্পর্শে কখনও এইচআইভি ভাইরাস ছড়ায় না। হাত মেলালে, আলিঙ্গন করলে, একই বাথরুম ব্যবহার করলে, একই গ্লাস বা থালা ব্যবহার করলে, খাবার ভাগ করে খেলে, একই দরজা-জানালা স্পর্শ করলে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে না। আক্রান্ত ব্যক্তির দেহরস সুস্থ মানুষের রক্তে প্রবেশ করলে সাধারণত এইচআইভি ছড়ায়। অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক, সংক্রমিত সূচ বা সিরিঞ্জ ব্যবহার, গর্ভাবস্থায়, প্রসবকালে, স্তন্যপান করালে সর্বপরি রক্তের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ হলে এইআইভি ভাইরাস ছড়ায়। মানুষের শরীরের বাইরে এই ভাইরাস বাঁচতে পারে না। তাই সাধারণ সংস্পর্শে সংক্রমণ হওয়া সম্ভব নয়। রক্ত পরীক্ষায় এই রোগী ধরা না পড়লে তা ছড়ানোর মতো অবস্থায় থাকে না।
ভ্রান্ত ধারণা: এইচআইভি মানেই জীবন শেষ
সত্য: এই ধারণার কোনও ভিত্তি নেই। বর্তমানে এইচআইভি একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য শারীরিক অসুস্থতা। ব্লাড প্রেশার বা সুগারের মতো নিয়মিত চিকিৎসায় এটি নিয়ন্ত্রণে থাকে। এরকম অনেক রোগীই বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। এই ধরনের রোগের ওষুধ বর্তমানে খুবই সহজলভ্য। তাই সহজেই এর চিকিৎসা সম্ভব।