এল নিনো’র তাণ্ডবে বিশ্বজুড়ে ভাইরাল অসুখের সতর্কতা হুয়ের 

দিল্লি, ২৬ জুন– ফের ‘এল নিনো’র তান্ডব । জলবায়ুর থেকে শুরু করে বৃষ্টি-অতিবৃষ্টি-খরা সব কিছুতেই তার অবাধ বিচরণ। বলা ভালো সব কিছুকেই নিয়ন্ত্রন করছে নিজের মত। যার ফলে তছনছ হয়ে যাচ্ছে আবহাওয়ার পরিস্থিতি। আর এই অবস্থাতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ভয়ের বার্তা দিচ্ছে হু। হু জানাচ্ছে ২০২৩ ও ২০২৪ সাল জুড়েই বিশ্বকে নাকানিচোবানি খাওয়াবে। ভাইরাস ঘটিত কিছু অসুখ চরমে উঠবে ।

জানিয়ে রাখি, প্রশান্ত মহাসাগরে দু’রকমের আবহাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এক হল, লা নিনা যার জেরে তাপমাত্রা কমে, আর দুই হল এল নিনো । এই এল নিনো আসলে ভীষণ উত্তাপ নিয়ে সবকিছু জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিতে আসে। এল নিনো হলে এক উষ্ণতম সামুদ্রিক জলস্রোত বা সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বাড়িয়ে দেয়। চিলি, পেরু-সহ দক্ষিণ আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলবর্তী দেশগুলিতে এল নিনোর প্রভাব দেখা যায় প্রায় ২ থেকে ৭ বছর অন্তর। ওই সময় মহাসাগরের পৃষ্ঠের (সি সারফেস) জল দ্রুত হারে অসম্ভব গরম হয়ে যায়। কারণ, ওই সময় প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম প্রান্ত থেকে গরম জলের স্রোত ধেয়ে আসে মহাসাগরের পূর্ব দিকে।

এল নিনোর উষ্ণ জলস্রোত যখন পূর্ব উপকূলের ঠান্ডা জলকেও উষ্ণ করে তোলে তখন মহাসাগর সংলগ্ন স্থলভাগের বিভিন্ন দেশের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। হু জানাচ্ছে, এল নিনোর প্রভাবে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অতিবৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে প্রশান্ত মহাসাগরে ঘনাচ্ছে সাইক্লোন। অস্ট্রেলিয়ায় আবার ভয়ঙ্কর খরা দেখা দিয়েছে। জলবায়ুর এই নানা বদলের কারণে ভাইরাসদের উপদ্রব বাড়ছে। এশিয়ার দেশগুলিতে মশাবাহিত রোগ অনেক বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) প্রধান টেড্রস অ্যাডানাম গেব্রেইসাস। তিনি বলছেন, বৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির কারণে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়বে। পেরুতে ডেঙ্গির প্রভাব মারাত্মকভাবে বেড়েছে। ডেঙ্গির ডেনভি ভাইরাসও চরিত্র বদল করছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। স্ত্রী এডিস ইজিপ্টাই মশা এই ভাইরাসদের বাহক। এরা আবার ইয়েলো ফিভার ভাইরাস, জিকা ও চিকুনগুনিয়া ভাইরাসেরও বাহক। চিকুনগুনিয়া ঠেকাতে ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন ফ্রান্সের বিজ্ঞানী। সেই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে।


জিকাও মশাবাহিত রোগ। এক্ষেত্রেও দায়ী এডিস মশা। ভাইরাস মশার কামড় থেকে শরীরে ঢুকে রোগ ছড়ায়। জিকার উপসর্গও অনেকটা একই রকম, তবে এই ভাইরাস শরীরের স্নায়ুতন্ত্র বা নার্ভাস সিস্টেমকে বড়সড় আঘাত করে। অন্তঃসত্ত্বা ও ছোট বাচ্চাদের এই ভাইরাস সংক্রমণে জটিল অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জিকা থেকেও সতর্ক করছে হু।