ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় কেন্দ্রের অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণের আর্জি খারিজ করল সর্বোচ্চ আদালত 

দিল্লি, ১৪ মার্চ – ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ভয়ঙ্কর স্মৃতি এখনও অমলিন। ঘটনায় দুর্গত পরিবারগুলিকে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রের আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ঘটনার দু-দশক পর আর কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। বরং রিজার্ভ ব্যাঙ্কে যে ৫০ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে, সেটা বিমা বা দাবি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে।

ইউনিয়ন কার্বাইডের কাছ থেকে ৭,৪০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি করে ২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি দায়ের করে কেন্দ্র। সেই আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৮৪ সালে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ইউনিয়ন কার্বাইডের প্ল্যান্ট থেকে বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে ভোপালে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। তার পরিপ্রেক্ষিতেই  সর্বোচ্চ আদালতে ওই সংস্থার কাছে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ চাওয়ার আর্জি দায়ের করে কেন্দ্র।

১৯৮৪ সালের ২ এবং ৩ ডিসেম্বর ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। গ্যাস বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা লক্ষাধিক। বিপর্যয়ের পর ইউনিয়ন কার্বাইড ১৯৮৯ সালে ভারতীয় মুদ্রায় ৭১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ দিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের দাবি ছিল ইউনিয়ন কার্বাইডকে ৭,৮৪৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ দিতে হবে।


বিচারপতি এসকে কওলের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ মঙ্গলবার জানিয়েছে, ঘটনার দু’দশক পর কেন্দ্রীয় সরকার যে ভাবে এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করছে তার কোনও যৌক্তিকতা নেই। পাশাপাশি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায় এই বাবদ ৫০ কোটি টাকা পড়ে আছে বলেও জানতে পারে আদালত। সেই অর্থ ভারত সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের কাজে ব্যবহার করবে বলেও জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। যে সমস্ত পরিবারে ক্ষতিপূরণ দেওয়া এখনও বকেয়া আছে, তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ওই তহবিলের অর্থ ব্যবহার করা যাবে।

আদালত বলে, ‘‘দু’দশক পর এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করার নেপথ্যে গ্রহণযোগ্য কোনও যুক্তি দিতে পারেনি ভারত সরকার। তা নিয়ে আদালত অসন্তুষ্ট। আমরা মনে করি এই আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।’’ প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের এই সাংবিধানিক বেঞ্চ গত ১২ জানুয়ারি এই মামলাটির শুনানি শেষ করেছিল। তার পর রায়দান স্থগিত রাখা ছিল।