দ্য মোদী কোশ্চেন : বিবিসির পাশেই ব্রিটিশ পার্লামেন্ট 

দিল্লি ,২২ ফেব্রুয়ারি — এতদিন দেশেই সীমাবদ্ধ ছিল বিবিসি বিতর্ক।বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিবিসির তীব্র সমালোচনা করার ১২ ঘন্টার মধ্যেই ব্রিটিশ পার্লামেন্ট বুঝিয়ে দিল, ঋষি সুনক সরকার এই ইস্যুতে বিবিসি-র পাশেই আছে। বিবিসি-র তথ্যচিত্র দ্য মোদী কোয়েশ্চেন রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক বলে মঙ্গলবার রাতেই সংবাদসংস্থা এ এন আই এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেছেন জয়শঙ্কর। তাঁর মতে, পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রে আগামী বছরেই লোকসভা নির্বাচন। এ বছরেও একাধিক রাজ্যে ভোট হবে।  এই সময়ে এই তথ্যচিত্র অত্যন্ত সুকৌশলে প্রকাশ করা হয়েছে।  
বিবিসি-র তথ্যচিত্র নিয়ে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিতর্ক চলছে। কেন্দ্র প্রথমে সেন্সর করলেও আদালতে সেই সেন্সরশিপ টেকেনি। এরপর বিবিসি-র দফতরে তিনদিন ধরে  সমীক্ষা চালায় আয়কর দফতর। বিরোধীরা সরব হয় মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আলোচনা এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল। 

সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, মঙ্গলবারই  ব্রিটেনের পার্লামেন্টে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সেখানেই সুনকের সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, বিবিসিতে ভারতের আয়কর দফতরের হানার বিষয়টি নিয়ে সে দেশের সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। কারণ ব্রিটেনের সরকার মনে করে, সংবাদমাধ্যমের  সম্পাদকীয় স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এবং ব্রিটেন তার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে গর্বিত।

অধিবেশনে এমপি ডেভিড রুটলি বলেন, ‘‘আমরা বিবিসির পক্ষে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের অর্থেই বিবিসি চলে। আমরা চাই, বিবিসির সম্পাদকীয় স্বাধীনতা যেন খর্ব না হয়।’’ তার পরেই ডেভিডের সংযোজন, ‘‘স্বাধীনতা কথাটি এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবং এই কথাটি আমরা আমাদের বন্ধু ভারতকেও জানাতে চাই।’’

গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা নিয়ে দু’টি পর্বের একটি তথ্যচিত্র তৈরি করে বিবিসি। যার প্রথম পর্বটি দেশে সম্প্রচার নিষিদ্ধ করে মোদী সরকার। তা নিয়ে ব্যাপক চাপান-উতোর শুরু হয় দেশে। আঁচ পড়ে বহির্বিশ্বেও। ঘটনার এক সপ্তাহ পর তা নিয়েই আলোচনায় সরগরম হয়ে উঠল ব্রিটেনের পার্লামেন্ট । ভারতীয় বংশুদ্ভুত এমপি তনমনদিৎ সিংহ ঢেসি ভারতে বিবিসি দফতরে  বক্তব্যেও উঠে আসে আয়কর সমীক্ষার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে বিবিসি বা অন্যান্য নামী সংবাদমাধ্যম ইংল্যান্ডের সরকার, তার প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদের সমালোচনা করে তার পরেও আমরা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার কথা ভাবিনি।’’ তিনি বলেন, ‘‘এই কারণেই আমরা আরও বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছি। কারণ, একটি তথ্যচিত্র তৈরির পরই এই আয়কর হানা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।’’