পাখি ও পরিবেশ রক্ষায় ‘নিঃশব্দ’ দীপাবলি তামিলনাড়ুর কিছু গ্রামে 

চেন্নাই, ১৩ নভেম্বর –  আলোর উৎসব দীপাবলিতে দেশ জুড়ে যখন সবাই শব্দবাজির পাশাপাশি আতসবাজির রোশনাইয়ে মাতোয়ারা , তখন নিস্তব্ধ রইল তামিলনাড়ুর বেশ কয়েকটি গ্রাম। এইসব গ্রামের কোন বাসিন্দাই শব্দবাজি ব্যবহার করলেন না। তামিলনাড়ুর গ্রামগুলিতে পাখি ও পরিবেশ বাঁচাতে এই ব্যতিক্রমী দীপাবলি দেখা যায় তামিলনাড়ুর কয়েকটি গ্রামে। তবে এই প্রথম নয়, দীর্ঘদিন ধরেই এই রীতি পালন করা হয়ে আসছে। 

এই গ্রামগুলির অন্যতম ভেটাঙগুড়ি। এই গ্রামে ১৯৭৭ সাল থেকে পাখির অভয়ারণ্য রয়েছে।  সেখানে ২১৭ প্রজাতির পাখির বাস . এখানে গত ৪০ বছর ধরে নিঃশব্দ দীপাবলি পালন করা হয়। পাশের আরো দুটি গ্রামের বাসিন্দারাও একই পন্থা নিয়েছেন।
তামিলনাড়ুর ইরোড থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে রয়েছে ভাডামুঙ্গম ভেল্লোডেরালয়। শীত পড়ার মুখে অক্টোবর থেকে সেখানে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা শুরু । জানুয়ারি মাস পর্যন্ত থাকেএই ‘অতিথি’  পাখিরা। এই পাখি ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই  দীপাবলিতে বাজি ফাটাননি গ্রামবাসীরা। ইরোডের মোট সাতটি গ্রামের বাসিন্দারা সম্মিলিত ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই গ্রামগুলিতে কেবল আলো, প্রদীপ দিয়ে দীপাবলি পালন করা হয়েছে।
এই গ্রামেরই এক বাসিন্দা জানান, ‘এখানে শিশুরাও দীপাবলিতে পটকা ফাটায় না।যাঁরা শহরের বাইরে যান,  তাঁরাই একমাত্র শব্দবাজি ব্যবহার করেন।’  

ইরোডের সেল্লাপ্পামপালায়ম, ভাডামুঙ্গম ভেল্লোডে, কোল্লুকুডি ,  পুঙ্গমপড়ির মতো গ্রামগুলি ‘নীরব দীপাবলি’ পালন করেছে। গ্রামগুলিতে প্রায় ৯০০ পরিবারের বাস। পাখিরালয় এবং পরিযায়ী পাখিদের কথা মাথায় রেখে তাঁরা বাজি না ফাটানোর সিদ্ধান্ত নেন। তামিলনাড়ুর এইসব গ্রামের বাসিন্দা দুই কিশোর জানায়, ‘ এটা পাখির বাচ্চা ফোটার সময় , পাখিরা বাজি ফাটালে ভয় পায় , তাই আমরা শব্দবাজি ব্যবহার করি না।  

 সাধারণ ভাবে  তারাবাজির জৌলুসে খুশি এই সব গ্রামের শিশুরা। এ বছরের উৎসব পরিযায়ী পাখিদের মরশুমের সঙ্গে মিলে গিয়েছে। তাই একেবারেই বাজি ফাটানো হয়নি। পাখিরালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এই দীপাবলিতে তাঁদের পাখিদের কোনও ক্ষতি হয়নি। 


একই রীতি চালু রয়েছে রাজ্যের ধর্মপুরী জেলার পালাক্কোদুর বল্লেনাহাল্লি গ্রামে। সেই গ্রামে প্রায় ২০০ জনের বাস। এই গ্রামেও পালন করাহয় নিঃশব্দ দীপাবলি।  গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, স্থানীয় এক মন্দিরে অনেক বাদুড় আসে।  তাই পরিবেশ রক্ষার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।