নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে স্বচ্ছ পদ্ধতির আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা

দিল্লি, ২ জানুয়ারি –  আইন করে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটি থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র।  লোকসভা নির্বাচনের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের পদ্ধতি এবং কর্তব্যের যাবতীয় শর্ত বদলে সেই ব্যবস্থা করে নরেন্দ্র মোদি সরকার। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে প্রায় বিরোধীশূন্য লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পাশ করানো হয় বিতর্কিত সেই বিল। রাষ্ট্রপতির সম্মতিও মেলে। এবার মোদি সরকারের সেই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। তাতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য একটি ‘স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ’ কমিটি গঠনের আবেদন জানানো হয়েছে। গত ২৮ ডিসেম্বর কেন্দ্র মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের নতুন পদ্ধতি চালু করার উদ্দেশ্যে নয়া আইন কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তা বাতিল করার আবেদন করা হয়েছে ওই জনস্বার্থ মামলায়।

প্রসঙ্গত বলা যায় , গত বছর মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, দেশে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবে একটি কমিটি। এই কমিটির সদস্য থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা। সুপ্রিম কোর্টের এই পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মতামত প্রকাশ করে বিরোধী দলগুলি। কিন্তু মোদি সরকার প্রস্তাবিত কমিটি থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নাম বাতিল করে ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী’র নাম নিয়োগ কমিটিতে ঢোকানর জন্য শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে ‘চিফ ইলেকশন কমিশনার অ্যান্ড আদার ইলেকশন কমিশনারস’ বিল ২০২৩’ পাশ করায়।
নতুন আইন মোতাবেক, দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী দ্বারা মনোনীত এক জন মন্ত্রী। কমিটির বৈঠক ডাকবেন প্রধানমন্ত্রী। কমিটির বৈঠকে গৃহীত নাম যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে। তিনিই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবেন।
 
দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন করতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নয়া আইনে  ‘পক্ষপাতদুষ্ট’  হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে অভিযোগ। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন এবং স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তাতেও একাধিক বার রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। শাসকদলের বেলায় নীরব, বিরোধী দলগুলির ক্ষেত্রে  অতিসক্রিয়, কমিশনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগও উঠেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই নয়া আইন বাতিল করার আবেদন করা হয়েছে জনস্বার্থ মামলায়।