মণিপুরের ঘটনায় কেউ ছাড় পাবে না: প্রধানমন্ত্রী  

দিল্লি, ২০ জুলাই –  সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হল বৃহস্পতিবার। অধিবেশন শুরুর আগে মনিপুর নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি এদিন বলেন, ‘ আমি দেশকে আশ্বস্ত করছি, কোনও অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।  আইন তার নিজের পথে চলবে। মনিপুরের মেয়েদের সঙ্গে যা হয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য।’ এই প্রথম মনিপুর প্রসঙ্গে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী। 

সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর আগে সংসদ ভবন চত্বরে মণিপুরের দুই মহিলাকে নির্যাতনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমি গভীরভাবে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ।  তিনি বলেন, ‘‘মণিপুরের ঘটনা যে কোনও সভ্য সমাজের পক্ষে লজ্জার। ওই ঘটনায়  দেশের ১৪০ কোটি মানুষের মাথা হেঁট হয়েছে।’’ বৃহস্পতিবার সকালে সংসদের সামনে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী সব রাজ্যের মুখমন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেন, তাঁরা যেন আইন ও শৃঙ্খলা আরও  শক্তিশালী করেন। বিশেষত মহিলাদের সম্মান রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে। 

প্রসঙ্গত, প্রথম দিন থেকে মনিপুরে ঘটে চলা সন্ত্রাস নিয়ে নিশ্চুপ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এই নিয়ে তাঁকে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। অবশেষে বাদল অধিবেশনের শুরুর দিন এ নিয়ে সরব হলেন তিনি। 
বুধবার মনিপুরের দুই তরুণীর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।  মনিপুরের দুই তরুণীকে নগ্ন অবস্থায় রাস্তা দিয়ে হাঁটতে বাধ্য করা হয়।  তাঁদের গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে।  ঘটনা ঘটে ৪ মে।  এর প্রায় ১০ দিন পর ১৪ মে এফআইআর দায়ের করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ কোন পদক্ষেপ করেনি।  
ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই দেশ জুড়ে সমালোচনার খোর বয়ে যায়। অধিকাংশ বিরোধী দল উত্তর-পূর্বের ওই বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের ইস্তফা দাবি করে। পাশাপাশি প্রশ্ন ওঠে মণিপুরে দুই মাসের বেশি সময় ধরে হিংসা ও সন্ত্রাসের রাজত্ব চললেও কেন নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের পক্ষে বৃহস্পতিবার নোটিস দেওয়া হয় লোকসভা এবং রাজ্যসভায়। কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গে, অসমের কংগ্রেস লোকসভা সাংসদ গৌরব গগৈ এ বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেন।   
এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘মণিপুরে গত ৭৮ দিন ধরে লাগাতার হিংসা ঘটে চলেছে। কেন্দ্রীয় সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। প্রধানমন্ত্রী নিশ্চুপ।’’ তিনি জানান, মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে সংসদে সরব হবেন বিরোধীরা। 
সব মিলিয়ে প্রথমদিন থেকেই উত্তাল সংসদের দুই কক্ষ।   
 আগামী ১১ অগস্ট পর্যন্ত চলবে দ্বিতীয় মোদি  সরকারের শেষ বাদল অধিবেশন। সেখানে ৩১টি বিল সংসদে পাশ করানো হতে পারে। এর মধ্যে নতুন পেশ হতে পারে ২১টি বিল। যার মধ্যে রয়েছে দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিতর্কিত অর্ডিন্যান্স সংক্রান্ত বিল।